প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বরিশাল সফরকে কেন্দ্র করে নতুন আশায় বুক বেঁধেছে দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষ।
দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়ায় আরও যোগ হয়েছে ভোলার গ্যাস বরিশালে সরবরাহ, মেডিকেল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সন্ধ্যা নদীর ওপর সেতুসহ প্রায় এক ডজন দাবি।
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পায়রা তৃতীয় সমুদ্রবন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন, লেবুখালী সেতুসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন ও চলমান রয়েছে।
বাস্তবায়িত ৩৯ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং আরও ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল। কিন্ত পর পর দুটি জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর প্রত্যাশার শেষ নেই।
প্রত্যাশার মধ্যে রয়েছে, বরিশালের মানুষকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ নদী খনন, শিল্প বিকাশে ভোলার গ্যাস বরিশালে সরবরাহ, বরিশালে স্বতন্ত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ, বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক খেলা আয়োজন, বাবুগঞ্জের খানপুরায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদকে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, সন্ধ্যা নদীর ওপর সেতুসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ দাবি।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বরিশাল জেলার সীমান্তবর্তী বাকেরগঞ্জের লেবুখালীর পায়রা নদীর তীরে বিশেষ হেলিকপ্টারে অবতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে তিনি সেখানে ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস’ উদ্বোধন এবং ৭ পদাদিক ডিভিশনসহ ১১টি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন করবেন। এছাড়া পটুয়াখালীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
পরে সেখানে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন প্রধানমন্ত্রী। বেলা সোয়া ২টার দিকে বরিশাল নগরীতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভাস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানের মঞ্চের পশ্চিম পাশে নির্মাণ করা হয়েছে প্রতীকী পদ্মা সেতু।
মঞ্চের পাশেই থাকবে উন্নয়ন চিত্র প্রদর্শনীর ডিজিটাল বিলবোর্ড। বঙ্গবন্ধু উদ্যানের বিশাল বোর্ডে বরিশাল জেলার ৩৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
বিকেল ৩টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপির সভাপতিত্বে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভোলার গ্যাস বরিশালে সরবরাহ করা, বরিশালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাবুগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বরিশাল বিমানবন্দর ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিকমানের করে গড়ে তোলা, বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর ওপর সেতু এবং কীর্তনখোলায় ক্যাপিট্যাল ড্রেজিংসহ প্রায় এক ডজন উন্নয়ন দাবি জানানো হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি বরিশাল বিভাগবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এসব দাবি উপস্থাপন করবেন।
বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ভোলার গ্যাস পাইপ লাইনের মাধ্যমে বরিশালে বিদ্যমান শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা সম্ভব হলে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পখাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, নদীবহুল দক্ষিণাঞ্চলের নৌ-যোগাযোগ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে কীর্তনখোলা নদীসহ বরিশাল-চাঁদপুর-ঢাকা এবং বরিশাল-চট্টগ্রাম নৌ-পথের বিভিন্ন অংশের নাব্য সংকট নিরসন একান্ত প্রয়োজন। জনকল্যাণমুখি এসব দাবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখাবেন বলে তার প্রত্যাশা।