আত্মহত্যা করেছেন ঢাবি ছাত্রী সুমাইয়া, মা বললেন বিশ্বাস করি না

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সুমাইয়া বেগমকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার শ্বশুর ও শাশুড়িকে জামিন দিয়েছেন আদালত। বুধবার নাটোরের সিনিয়র দায়রা জজ আদালত তাদের জামিন দেন।

জামিন আবেদনের শুনানিতে হত্যা মামলায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়েছে, সুমাইয়া বেগম ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। প্রায় দুই মাস আগে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হলেও মামলার বাদী এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না।

নাটোরের দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুমাইয়া বেগম হত্যা মামলায় গঠিত তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ভিসেরা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১২ জুলাই প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এর আগে ৬ জুলাই সিআইডির বিভাগীয় (রাজশাহী) ফরেনসিক ল্যাবে সুমাইয়া বেগমের মরদেহের ‘রাসায়নিক বিশ্লেষণ’ দাখিল করা হয়। সেখানে সুমাইয়া ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়।

১২ জুলাই নাটোর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওই প্রতিবেদনের ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ১৯ আগস্ট তিনি এ ব্যাপারে নাটোর সদর আমলি আদালতে একটি প্রতিবেদন পাঠান। ৩১ আগস্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওই প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেন।

বুধবার দায়রা জজ আদালতে সুমাইয়া হত্যা মামলার আসামি তার স্বামী মোস্তাক হোসাইন, শ্বশুর সৈয়দ জাকির হোসেন ও শাশুড়ি সৈয়দা মালেকা বেগমের জামিন শুনানি হয়। এতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপন করা হয়। আদালত সৈয়দ জাকির হোসেন ও সৈয়দা মালেকা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেন। জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে ওই তিনজন কারাগারে ছিলেন।

এ বিষয়ে সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা বলেন, কিছুদিন আগেও ভিসেরা প্রতিবেদন সম্পর্কে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে খোঁজ নিয়েছিলাম। সে সময় আমাকে বলা হয় প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

তিনি অভিযোগ করেন, আসামিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এ প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে, আমি বিশ্বাস করি না। আইনগতভাবে কি পদক্ষেপ নেয়া যায় সে বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করব।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে সরাসরি আদালতে দেয়া হয়েছে। আমার কাছে কার্বন কপি আছে। সম্প্রতি বিষয়টি জানতে পেরেছি।

২২ জুন রাতে নাটোর সদর উপজেলার হরিশপুর বাগানবাড়ি এলাকায় স্বামী মোস্তাক হোসাইনের বাড়ি থেকে সুমাইয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শহরের হাজরা নাটোর এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন সুমাইয়া।