আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে: কাদের

:
: ১ বছর আগে

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। সরকারের পরিবর্তন যদি কেউ চান, নির্বাচনে আসুন।

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির ৩০তম সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ১০ ডিসেম্বর, ৩০ ডিসেম্বর যে হাঁক-ডাক দিয়েছে, শেষ পর্যন্ত ঘোড়ায় ডিম পাড়লো। এই সব হাঁক-ডাকে ঘোড়াও হাসে। অনেকে বলেছিল, দেশ সংঘাতের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত কিছুই হলো না। সরকারের পতন হবে, শেখ হাসিনা এগুলো ভয় পায় না। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া শেখ হাসিনা কাউকে ভয় পায় না।

‘আমরা জনগণের জানমাল রক্ষায় সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালতের রায়ে ডেড ইস্যু। এটা আর জীবিত নয়। ডেড ইস্যু নিয়ে নতুন করে হাঁক-ডাক গণতন্ত্র সমর্থন করে না, দেশের জনগণ সমর্থন করে না।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনে শোচনীয়ভাবে হেরেছি, গতকাল গাইবান্ধা নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেনি। আগামীর নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, সরকার কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। সরকারের পরিবর্তন যদি কেউ চান, নির্বাচনে আসুন। জনগণ চাইলে সরকারে আছি, না চাইলে চলে যাবো।

 

শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিএনপিকে স্বাগত জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এমন একটা রাজনৈতিক দল, যে দল ঘরে গণতন্ত্র চর্চা করে, দেশে গণতন্ত্র বিকশিত করে। গণতন্ত্র এই দেশে স্বৈরশাসকদের হাতে পিষ্ট হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

‘বিরোধী দল শক্তিশীর হলে, গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে। কিন্তু, বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা, বিরোধিতার কারণে জ্বালাও-পোড়াও, আগুনসন্ত্রাস, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড—সেখানে গণতন্ত্রের ভাষা স্তব্ধ হয়ে যায়। বিরোধী দলকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে স্বাগত জানাই।’

অযথা সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের বিরোধিতা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রয়োজন ছাড়া যেসব সরকারি কর্মকর্তা বিদেশে ভ্রমণ করতে যায়, এটা আমাদের ভাবায়। সরকারি চাকরিজীবীদের কোনো একটা কারণ দেখিয়ে বিদেশে যেতেই হবে। এই বিদেশ ভ্রমণ কেন? অনেকে চিকিৎসার কথা বলে যায়, কেউ কেউ হয়ত আসলেই চিকিৎসা করতে যায়। সব বিষয়য়ে বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে।’

 

‘আমরা রাজনীতি করি। কিছু মানুষ টাকা ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাদের আরও টাকা দরকার, আরও সম্পদ দরকার। কেউ কেউ কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে। তাদের আমরা ঘৃণা করি। এই দেশ আরও উন্নত হবে যদি সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, চুরি, পাচার বন্ধ করতে পারি। ভালো কাজের জন্য প্রসংসা পাবে আবার খারাপ কাজের জন্য শাস্তি পেতে হবে।’

প্রকৌশলীদের সৎ থাকার পরামর্শ দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।

 

‘এখানে অনেক ভালো মানুষ আছে, যারা ফাঁকি দিচ্ছেন। তারা দেশকে ফাঁকি দিচ্ছেন, নিজেকে ফাঁকি দিচ্ছেন। যে অপকর্ম করবে, ফাঁকি দেবে, মানসম্মত কাজ করবে না, তার এই জীবন ব্যর্থ জীবন। তা চিরজীবন থেকে যাবে। এর ভাগ পরিবারকেও বহন করতে হবে। ছেলেমেয়েদেরও ভালো খারাপ দুটো কাজেরই ভাগ নিতে হবে। কত টাকা দরকার একজন মানুষের ভালোভাবে জীবনযাপন করতে? আমাদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করার সময় এসেছে।’

নিরাপদ সড়ক আইনের বিধিমালা প্রকাশিত হয়েছে, জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেক দিন আগে সড়ক পরিবহন বিলটি সংসদে পাস হয়েছে। বিধি প্রণীত না হওয়ায় এই আইনটির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া প্রলম্বিত হয়ে যায়।

 

‘সড়ক পরিবহনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান। আমাদের এত উন্নয়ন, এত অর্জন। পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পরেছি। মানসম্মত কাজ সময়ের দাবি। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট সড়ক যোগাযোগ জরুরি হয়ে পড়েছে। কাজে-কর্মে প্রকৌশলীদেরও স্মার্ট হতে হবে। তবেই আমাদের স্মার্ট সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা করা সম্ভব।’

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে দেশের সড়ক পথ উন্নয়নে জোর দিয়েছিলেন। যুদ্ধবিধস্ত দেশের সড়ক ও যোগাযোগ পথ সৃষ্টি করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এখন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেধা-শ্রম দিয়ে দেশের সড়ক পথকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছেন। সারা দেশে সড়ক যোগাযোগে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে।’

সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মঈনুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন—সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইশহাক, সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার চক্রবর্তী।