৭০ বছর বয়সে বিয়ে করে আলোচনায় সাবেক কলেজশিক্ষক

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

৭০ বছর বয়সে বিয়ে করে আলোচনায় এসেছেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার হুড়কা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক হাওলাদার শওকত আলী। কনে মোংলা উপজেলার মিঠাখালী গ্রামের বিধবা শাহেদা বেগম নাজু (৩৫)।

গত শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও দুই পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।

 

শওকত আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জীবনের শুরু থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। ভাই-বোন ও এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল আমার একমাত্র লক্ষ্য। যে কারণে বিয়ে তো দূরের কথা নিজের জমিতে একটি ভবনও করিনি।’

সব স্বপ্ন পূরণ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ তা’আলা আমার সব স্বপ্ন পূরণ করেছেন। ভাই-বোন সবাই শিক্ষিত হয়েছে। তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ভাই-বোনদের পাশাপাশি এলাকার অনেকের পড়াশুনার খরচ দিয়েছি। তারাও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে চাকুরী করছে দেশ-বিদেশে।’

 

স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে এতদিন বিয়ে করেননি জানিয়ে শওকত আলী বলেন, ‘স্বজনদের চাপ থাকলেও ভাই-বোনদের দায়িত্ব ও স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে এতদিন বিয়ে করিনি। কিন্তু শেষ বয়সে এসে নিজেকে খুব একা মনে হতো। যে কারণে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। এতে পরিবারের সবাই খুশি হয়। গত শনিবার বিয়ে করেছি।’

বিয়ের পর খুব ভালো আছেন উল্লেখ করে অবসরপ্রাপ্ত এই কলেজশিক্ষক বলেন, ‘বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ি এখনো যাইনি। তবে, স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। একটু সময় পেলে শ্বশুরবাড়ি যাব। নাজু সবকিছু জেনেই আমাকে বিয়ে করেছে। আমিও নাজুকে আপন করে নিয়েছি। বাকিটা সময় একসঙ্গে কাটাতে চাই।’

 

 

শাহেদা বেগম নাজু বলেন, ‘এই বিয়েতে আমি খুবই খুশি। সবার কাছে দোয়া চাই, বাকিটা জীবন যেন সুখ-শান্তিকে কাটাতে পারি।’

জানা যায়, শাহেদা বেগম নাজুর এর আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। সেখানে একটি মেয়ে আছে তার। সেই মেয়েরও দায়িত্ব নিয়েছেন হাওলাদার শওকত আলী।

 

হাওলাদার শওকত আলী ১৯৫৬ সালে রামপাল উপজেলার জিগিরমোল্লা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৫ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে খুলনা বিএল কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে রামপাল ডিগ্রি কলেজে প্রভাষক হিসেবে চাকুরী জীবন শুরু করেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান শওকত আলী।