 
                                            
                                                                                            
                                        
এমন দুর্ভাগা ক্রিকেটারও বুঝি ছিলেন? ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সুন্দর এবং সেরা পেসার ধরা হতো তাকে। অথচ থমাস লেসলি প্রিচার্ড জীবনে কখনও টেস্ট খেলতে পারেননি। তবুও ক্রিকেটের ইতিহাসে দারুণ একটি স্থান দখল করে রেখেছেন নিউজিল্যান্ডের এই ফাস্ট বোলার। ২০০টির মত প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন তিনি। উইকেট কত জানেন? চোখ কপালে ওঠার মত- ৮১৮টি।
মার্চের ১০ তারিখ শতবর্ষে পা রেখেছিলেন নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সেরা এই পেস বোলার। তবে জীবনযুদ্ধে আর অপরাজিত থাকতে পারেননি তিনি। শতবর্ষেই পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে পাড়ি দিলেন পরপারে।
১৯৪০ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে মাঠ কাঁপিয়েছিলেন প্রিচার্ড। কাউন্টিতে কেবল এই ক্লাবটির হয়েই তিনি নিয়েছেন ৬৯৫টি উইকেট।
১৯৩৭ সালেই ২০ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট দলে খেলার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছিলেন প্রায় টম প্রিচার্ড। কিন্তু তার দুর্ভাগ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তখন আর খেলা হয়নি। তবে জাতীয় দলে খেলতে না পারলেও কাউন্টি ক্রিকেটে খেলার ইচ্ছা কখনও ত্যাগ করেননি তিনি। যে কারণে, ১৯৪৯ সালে ইংল্যান্ড সফরে জাতীয় দলের হয়ে আর খেলা হয়নি প্রিচার্ডের।
ওয়ারউইকশায়ারের হয়েই ক্যারিয়ারকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রিচার্ড। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫১ পর্যন্ত প্রতিটি মৌসুমেই ১০০ করে উইকেট নিয়েছেন তিনি।
৪১ বছর বাইরে কাটানোর পর ১৯৮৬ সালে নিজ দেশ নিউজিল্যান্ডে ফিরে আসেন প্রিচার্ড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মধ্যপ্রাচ্য এবং ইতালিতে কাটানোর পর ইংল্যান্ডে ফেরেন ১৯৪৫ সালে। যুদ্ধের পরপরই প্রেমিকা ম্যাভিসকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের ৬৩ বছরের মাথায়, ২০০৯ সালে মারা যান ম্যাভিস। তাদের সংসারে রয়েছে দুটি কন্যা সন্তান।
গত মার্চে শততম জন্মবার্ষিকীতে প্রিচার্ড নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘স্কুল জীবন থেকেই আমি ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। তখন থেকেই ক্রিকেট আমাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। আমার মা ছিলেন জার্মানির অভিবাসি। যেখানে ক্রিকেটকে পছন্দই করা হয় না।’
নিউজিল্যান্ড দলে খেলতে না পারা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই প্রিচার্ডের। বরং তিনি খুশি। তিনি বলেন, ‘১৯৩৭ সালে নিউজিল্যান্ড দলে সুযোগ না পাওয়াটা আমার জন্য ভালোই হয়েছে। কারণ, তখন যদি জাতীয় দলে সুযোগ পেতাম, তাহলে অনেক কিছুই ওলট-পালট হয়ে যেতো।’