২০১৫ বিশ্বকাপে ভালো খেলতে খেলতে হঠাৎ কাঁধের ইনজুরিতে পড়লেন এনামুল হক বিজয়। সেই ইনজুরি তাকে এতটাই দূরে ঠেলে দিল যে, গত তিন বছর আর জাতীয় দলের দরজাই খোলা হয়নি তার জন্য। ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা ভালো খেলে যাওয়ার পরও নির্বাচকদের বিবেচনাতেই নিজেকে আনতে পারেননি বিজয়।
এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় ক্রিকেট লিগ কিংবা বিপিএলে দারুণ ব্যাটিং করে নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করলেন তিনি। এরপরই নির্বাচকদের নজর কাড়তে সক্ষম হন। তারওপর ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকার কিংবা লিটন দাসদের টানা ব্যর্থতাও তার সুযোগ পাওয়ার বড় একটা কারণ।
গত তিনটি বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা ভালো খেলার পরও জাতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। এ জন্য নিজেকে কতটা হতাশ মনে হতো? জাতীয় দলের অনুশীলনে সোমবার এমন প্রশ্ন করা হলে বিজয় হতাশার ছিটেফোটাও দেখালেন না। শুধু জানিয়েছেন, সময়টা তার জন্য ছিল চ্যালেঞ্জিং। তবে সবচেয়ে বড় কথা, জাতীয় দল ভালো খেললে তার ভালো লাগতো। আর নিজেকে নিয়ে সব সময়ই উঁচু স্বপ্ন দেখেন। এ কারণে হতাশা গ্রাস করে না তাকে।
বিজয় বলেন, ‘হতাশার চেয়ে বেশি ছিল চ্যালেঞ্জ। আমার জন্য ঘরোয়া পর্যায়ের প্রত্যেকটা আসরই চ্যালেঞ্জিং ছিল। প্রিমিয়ার লিগেই যেমন, শেষ হলেই কথা উঠতো বিজয় কত রান করলো। বা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও একই কথা। বিপিএলেও সবাই দেখেছে কত করলাম। এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ। নিজেকে আরও ভালো কিছুর জন্য অনুপ্রাণিত করা। ভালো খেলতে না পারাই হতাশার। জাতীয় দলে সবাই যখন ভালো খেলে, তখন আসলে নিজের জন্য হতাশ লাগে না। বরং দেশ ভালো খেললে ভালো লাগে। আমি সব সময় বড় স্বপ্ন দেখি। এ কারণে হয়তো হতাশ লাগে না।’
গত তিনটি বছর জাতীয় দলের বাইরে। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন নিয়মিত। কেমন অভিজ্ঞতা হলো, নিজের মধ্যে কেমন পরিবর্তন এলো? জানতে চাইলে বিজয় বলেন, ‘আমার মনে হয় অভিজ্ঞতার একটা ব্যাপার আছে। লম্বা কিছু ম্যাচ খেলেছি। সম্ভবত ২০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছি। ওয়ানডেও খেলেছি ৪০টার মতো। এটা একটা অভিজ্ঞতা। এছাড়া ওয়ানডে লিগে বা প্রথম শ্রেণির লিগে দলকে জেতানো বা জেতা দলে থাকা; এটাও একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। ছোটখাট আরও অনেক কিছু থাকে। ব্যাটিংয়ের দক্ষতা বাড়ানো, কিপিংয়ে কিছু কাজ করা; আসলে নিয়মিত খেলার মধ্যে থাকলে উন্নতির সুযোগটাই বেশি থাকে। আমার কাছে মনে হয়, উন্নতি অনেক বেশি হয়েছে। ইনিংসগুলো বড় হচ্ছে। দুটা ডাবল সেঞ্চুরি করেছি। সব কিছুতেই নিজেকে আগের থেকে ভালো লাগছে।’
এই যে দীর্ঘ সময়ে নিজেকে অনেকটাই পরিবর্তন করে এনেছেন। দীর্ঘ তিন বছর পর জাতীয় দলে একদন নতুন একজন এনামুল হক বিজয়ের অন্তর্ভুক্তি হচ্ছে। এই নতুন বিজয়ের কাছ থেকে কেমন ব্যাটিং প্রত্যাশা করতে পারে দর্শকরা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খেলি, দেখা যাক। দোয়া করবেন। মনে হয় ভালো কিছু করতে পারবো।’
তিন বছরে নিজের টেকনিকে কোনো পরিবর্তন এসেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিন বছরে অনেক কিছুই চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি নতুন কিছু করার। যদি লম্বা রান করতে পারি, যদি দলকে যদি কিছু দিতে পারি; তখন হয়তো বোঝা যাবে কী করতে পারি।’