‘স্যার আমাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে’

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

‘স্যার আমার অমতে আমার পরিবার আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে। আমি আরো পড়ালেখা করতে চাই।’ এভাবেই ইউএনওকে ফোন করে বাল্যবিয়ে থেকে নিজেকে রক্ষা করলেন এক ছাত্রী।

গত রবিবার ১০ মার্চ মাদারীপুরের শিবচরে এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রীর ফোন পেয়ে ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান বিয়ে বন্ধ করার উদ্যোগ নেন।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রবিবার দুপুরে ইউএনও’র মোবাইলে একটি মেয়ে কল করে বলে, ‘স্যার আমার অমতে আমার পরিবার আমাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে।’

তখন ইউএনও মেয়েকে বললেন, ‘তোমার বয়স কত।’ মেয়েটি উত্তরে বলে, ‘জন্ম সনদ অনুযায়ী ১৬ বছর। আমি শেখ ফজিলাতুন্নেচছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমি আরো পড়ালেখা করতে চাই।’

ইউএনও বললেন, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’ মেয়েটি বলে, ‘আমার বাড়ি কেরানীগঞ্জ জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায়। আমি শিবচর উপজেলা দ্বিতীয়াখন্ড ইউনিয়নের মোজ্জাফরপুর গ্রামে আমার নানা বাড়ি থেকে পড়াশুনা করি।’

এরপর তাৎক্ষনিক উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হামিদা খাতুনকে ফোন করে ডেকে আনেন ইউএনও। গাড়ি নিয়ে চলে যান মেয়েটির বাসায়।

অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের প্রস্তুতি বন্ধ করেন তিনি। সোমবার সকালে আবারো ইউএনওকে ফোন করে মেয়েটি বলে, ‘আমার পরিবার আমাকে ঢাকায় নিয়ে বিয়ে দিবে।’

এবার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল নোমানকে পাঠিয়ে মেয়েসহ তার পরিবারকে ধরে নিয়ে আসা হয় উপজেলায়। মেয়েটির বাবা হাবিবুর রহমানকে বলা হয়, আপনি যদি আপনার মেয়েকে দূরে নিয়ে জোর করে বিয়ে দেন তাহলে আপনাকে জেলে পাঠানো হবে। এরপর মেয়ের বাবা ইউএনওকে মুচলেকা দিয়ে বলেন, ‘আমি এখন আর আমার মেয়েকে বিয়ে দিব না’।

এ ব্যাপারে ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বাল্যবিবাহের প্রস্তুতি চলছিল এমন খবর পেয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে কনের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রস্তুতি বন্ধ করেছি। তারপরও ঢাকায় নিয়ে বিয়ে দিতে চেয়েছিল, সেটাও বন্ধ করেছি। বাল্যবিবাহের কুফলগুলি তোলে ধরে তাদের সচেতন করা হয়।’