স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে মেসেজ দিয়ে ভুয়া রাষ্ট্রপতি গ্রেপ্তার

লেখক:
প্রকাশ: ৮ মাস আগে

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি পরিচয় দিয়ে একটি নম্বর থেকে দুজন নার্সকে বদলির সুপারিশ করে দুটি এসএমএস পাঠানো হয়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেসেজ দুটি ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে পাঠান। ডিবি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে, রাষ্ট্রপতির মোবাইল থেকে অথবা রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মোবাইলে কোনো মেসেজ দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ নার্সকে বদলির সুপারিশের মেসেজটি ভুয়া।

তদন্তের এক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া রাষ্ট্রপতি পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার নাম মো. সিরাজ। তাকে পাবনার সুজানগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিরাজকে যখন গ্রেপ্তার করতে ডিবি পুলিশ তার বাসায় যায় তখন তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মোসা. নবীনা খাতুন ও মোসা. পারভীন আক্তারকে বদলির জন্য সিরাজ রাষ্ট্রপতি পরিচয় দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে দুটি মেসেজ পাঠান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেসেজ দুটি আমার কাছে পাঠান। ডিবি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে, রাষ্ট্রপতির মোবাইল থেকে অথবা রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মোবাইলে কোনও মেসেজ দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ নার্সের বদলির সুপারিশের মেসেজটি ভুয়া। তদন্তের এক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে ভুয়া রাষ্ট্রপতি পরিচয় দেওয়া সিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এপিএস-২, মন্ত্রী, এমপি এবং বড় বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে প্রতারণাকারী চক্রের অনেক সদস্যকে ডিবি সাইবার আইনের আওতায় নিয়ে এসেছিল।

হারুন অর রশীদ বলেন, সিরাজ একাধিক এমপির ভুয়া ডিও লেটার দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বদলির জন্য তদবির করেছেন। সিরাজ অষ্টম শ্রেণি পাস। তিনি বিয়ে করেছেন তিনটি। এর মধ্যে একজন নার্স, একজন শিক্ষক রয়েছেন। ৮ মাস আগে তিনি আরেকটি বিয়ে করেছেন।

 

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ছাড়াও সিরাজ বিভিন্ন এমপি ও মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করেছেন। প্রতারণা তার পেশা। অষ্টম শ্রেণি পাস হলেও তিনি প্রতারণার বিষয়টি ভালোভাবে লব্ধ করেছেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, সিম কেনার পর ট্রু-কলারে নম্বর সেভ করতেন রাষ্ট্রপতির নামে। তদবিরের জন্য যে সিম দিয়ে সিরাজ তদবিরের জন্য মেসেজ দিতেন সেই সিমটি পানিতে ফেলে দিতেন। এরপর তিনি থানায় জিডি করেন তার সিম হারিয়ে গেছে। নতুন সিম কিনে আবার একইভাবে প্রতারণা করতেন। সিম পানিতে ফেলে জিডি করার অর্থ হলো, পুলিশ তাকে ধরলে তিনি বলতেন তার সিম হারিয়ে গেছে, তাই জিডিও করেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

সিরাজ রাষ্ট্রপতির নাম কেন ব্যবহার করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে জানতে রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি ছাড়া এমপি, মন্ত্রী এমনকি সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির নাম ব্যবহার করে যারা প্রতারণা করেছেন এমন সবাইকে ডিবি আইনের আওতায় এনেছে।