ত্রিপুরায় গভীর রাতে স্বামীর মাথা কেটে ঠাকুর ঘরে ঝুলিয়ে রাখলেন স্ত্রী। পরে পুলিশের সামনে একথা স্বীকার করেন সাবিত্রী তাঁতি (৪০) নামের ওই নারী।
শুক্রবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে ত্রিপুরার খোয়াইয়ের রামচন্দ্রঘাটের ইন্দিরা কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাবিত্রী কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। গভীর রাতে নিজেদের শোয়ার ঘরে এ ঘটনা ঘটান তিনি। একই ঘরে ঘুমিয়েছিলেন দুই ছেলে ও তার ভাই ব্রজেন্দ্র তাঁতি। সে সময় স্বামী রবীন্দ্র তাঁতি (৫০) গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন।
জানা যায়, ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো দা দিয়ে প্রথমে স্বামীর গলার নলি কাটেন সাবিত্রী। পরে ধীরে ধীরে শরীর থেকে মাথা পুরোপুরি আলাদা করেন। এরই মধ্যে শুয়ে থাকা তার এক ছেলে সজাগ হয়ে ঘটনাটি দেখে ফেলে। হাউমাউ করে চিৎকার দিয়ে তার মামাকে ডেকে তোলে। মামা ব্রজেন্দ্র তাঁতি বিষয়টি শুনেই ভয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যান।
এ অবস্থায়ও থেমে থাকেননি সাবিত্রী। স্বামীর মুণ্ডচ্ছেদ করার পর একটি ব্যাগে ভরে সেই মুণ্ডটি নিয়ে ঠাকুর ঘরে ঝুলিয়ে রাখেন তিনি। খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সঙ্গে সঙ্গে কেউ এগিয়ে না এসে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় সাধিকা হিসেবে পরিচিত সাবিত্রী। বিভিন্ন পূজা-অর্চনা নিয়ে তিনি প্রায় সময় ব্যস্ত থাকেন। নিরামিষ খেয়েই দিন যাপন করতেন তিনি। কিন্তু শুক্রবার (১১ মার্চ) ঘটনার দিন হঠাৎ আমিষের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। ঘটনার দিন তিনি মাংসও খেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পরিবারের লোকজন।
নাবালক দুই ছেলেসহ সাবিত্রীর ভাই ব্রজেন্দ্র তাঁতি জানিয়েছেন, দু-তিনদিন ধরে সাবিত্রীর মানসিক বিকারগ্রস্ততা নজরে আসে তাদের। তাই স্থানীও এক ওঝাকে দেখানো হয় তাকে।
এদিকে শেষ রাতে খুনের ঘটনার খবর পেয়ে খোয়াই থানার পুলিশ রামচন্দ্রঘাটের ইন্দিরা কলোনি এলাকায় ছুটে যায়। যদিও মরদেহটি উদ্ধার করাসহ অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসতে অনেকটাই সময় লেগে যায় তাদের। পরে পুলিশ মরদেহ মর্গে পাঠিয়ে অভিযুক্তকে লকআপে নিয়ে রাখে।
পুলিশ জানায়, পুরো ঘটনাটিই তদন্তাধীন রয়েছে। থানার বড়বাবু উদ্যম দেববর্মা শনিবার দুপুরে জানান, আপাতত ৩০২ ধারায় একটি মামলা নিয়ে এদিনই অভিযুক্তকে খোয়াই জেলা দায়রা আদালতে তোলা হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার ফিরে না আসা পর্যন্ত এর চেয়ে বেশি কিছুই বলা যাচ্ছে না।