রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে স্বামীর পরকীয়া প্রেমিকার অপমান সইতে না পেরে সাথী আক্তার দীপা (২৫) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ পৌরসভার আলম চৌধুরীর পাড়ায় বাবার বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
এ ঘটনায় শুক্রবার ওই গৃহবধূর বাবা আব্দুস সালাম প্রামাণিক বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় জামাই রাসেল চৌধুরী (৩০) ও রাসেলের পরকীয়া প্রেমিকা সেতুকে (৩৫) আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন।
রাসেল চৌধুরী গোয়ালন্দ পৌরসভার জুড়ান মোল্লার পাড়ার মঞ্জু চৌধুরীর ছেলে ও সেতু বিজয় বাবুর পাড়ার সেলিম মোল্লার মেয়ে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে সালাম প্রামাণিকের মেয়ে সাথীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে রাসেল চৌধুরীর বিয়ে হয়। তাদের দুইজনেরই এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে তারা ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। তাদের সাংসারিক জীবন ভালোই কাটছিল। বছর খানেক আগে রাসেল চৌধুরী গোয়ালন্দে এক কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী সেতুর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে রাসেল চৌধুরী সাথীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন।
একপর্যায়ে চার মাস আগে রাসেল চৌধুরী তার পরকীয়া প্রেমিকা সেতুকে ঢাকার বাসায় নিয়ে তোলেন। এ সময় তার স্ত্রী সাথী ওই নারী সম্পর্কে জানতে চাইলে রাসেল বলে সে তাকে বিয়ে করবে। বিষয়টি সহজে মানতে না পেরে সাথী সেখান থেকে গোয়ালন্দে বাবার বাড়িতে চলে আসে। এরপর থেকে রাসেল চৌধুরী ও সেতু তাদের জীবন থেকে সরে দাঁড়াতে সাথীকে ফোনে বিভিন্ন ধরনের কথা বলতে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাসেল চৌধুরীর ভাগ্নের সুন্নাতে খাৎনার অনুষ্ঠানে যান সাথী। সেখানে রাসেল চৌধুরী সেতুকেও নিয়ে আসেন। সেতু তাকে অপমানজনক বিভিন্ন কথা বলেন। স্বামীর পরকীয়া ও অপমান সইতে না পেরে ওইদিন সন্ধ্যায় সাথী তার বাবার বাড়িতে এসে নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ. এজাজ শফী জানান, সাথীর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন। এজহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।