সাংবাদিক সংগঠনের নামে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ভবনে পরিবহন কাউন্টারের কক্ষ দখল করা হয়েছে। প্রায় দু’মাস আগে সেখানে ‘সাংবাদিক ঐক্য পরিষদ’ নামে কথিত একটি সংগঠনের কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এ নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বরিশালের পেশাদার সাংবাদিক মহলে। এর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
টার্মিনালে একাধিক পরিবহন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় টার্মিনালের অঘোষিত নিয়ন্ত্রক আওয়ামী লীগ নেতা ও কাশীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লার দখল করা কাউন্টারে সাংবাদিক ঐক্য পরিষদ নামের সংগঠনের কার্যালয় করা হয়। এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দাবিদার সৈয়দ নাজমুল ইসলাম সমকালকে জানিয়েছেন, তিনি লিটন মোল্লার মাধ্যমে টার্মিনালে সংগঠনের কার্যালয় করেছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, টার্মিনাল ভবনের দক্ষিণ দিকের শেষ প্রান্তে পশ্চিম ব্লকে দুটি কাউন্টার কক্ষ দখল করে ওই কার্যালয় করা হয়েছে। একাধিক পরিবহন শ্রমিক জানান, মাঝেমধ্যে দু-একজন এসে ওই কার্যালয়ে বসেন। তারা কোথাকার সাংবাদিক- এ বিষয়েও কিছু জানেন না সাধারণ শ্রমিকরা।
জেলা বাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন জানান, সিটি করপোরেশন থেকে তার নামে বরাদ্দকৃত তিনটি কাউন্টার কক্ষ একটি প্রভাবশালী চক্র দখল করেছে। তার দুটি কক্ষ মিলিয়ে সাংবাদিক সংগঠনের অফিস করা হয়েছে। অদৃশ্য চাপের কারণে তিনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বাস মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইউনুস আলী বলেন, টার্মিনালের কাউন্টারের জন্য নির্ধারিত কক্ষে শুধু পরিবহন প্রতিষ্ঠানের অফিস স্থাপনের নিয়ম রয়েছে। সেখানে সাংবাদিক সংগঠনের অফিস কীভাবে হলো, পুরো বিষয়টি নিয়ে তারা অন্ধকারে আছেন।
সৈয়দ নাজমুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের সংগঠিত করতে তিনি ২০০৮ সালে এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। আগে এর কার্যালয় ছিল বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের গুঠিয়ায়। সম্প্রতি লিটন মোল্লার মাধ্যমে বাস টার্মিনালে কার্যালয় করেছেন। খুব শিগগিরিই তা সরিয়ে নেবেন।
এ বিষয়ে লিটন মোল্লার বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, নামধারী সাংবাদিকদের ভুঁইফোড় এসব সংগঠন পেশাদার সাংবাদিকদের সম্মান নষ্ট করছে। এর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, সাংবাদিক নামধারী এসব টাউট-বাটপারের জন্যই পেশাদার সাংবাদিক দেখলেও মানুষ আড়চোখে তাকায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পদক্ষেপ নিলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রিপোর্টটি জাতীয় দৈনিক সমকাল পত্রিকা থেকে নেয়া হয়েছে।