 
                                            
                                                                                            
                                        
সহকর্মীরা ফোন রিসিভ না করায় আক্ষেপ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।
বুধবার সকালের দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি এ স্ট্যাটাস দেন।
বর্তমানে তিন বছরের চুক্তিতে নিউইয়র্কে বিশ্বব্যাংকের ‘বিকল্প নির্বাহী পরিচালক’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শফিউল আলম।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন– ‘সহকর্মীদের সঙ্গে প্রবাস থেকে কথা বলতে গিয়ে বুঝলাম তাদের বেশিরভাগই অপরিচিত কল ধরেন না, মেসেজ পড়ে দেখেন না বা উত্তর দেন না। আমরা কি এ সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারি না?’
সন্ধ্যার পর ‘ফোন না ধরার সংস্কৃতি’ শিরোনামে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন সাবেক এ মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
শফিউল আলম লেখেন– ‘আমার একটি পোস্টে কিছু নেতিবাচক কথা লিখেছিলাম। তার একটু ব্যাখ্যা দিচ্ছি। বিদেশ হতে সময়ের ব্যবধানের কারণে ফোন করা খুব-ই কঠিন। সময় বুঝে হিসাব-কিতাব করে ফোন করতে হয়। যখন সেই ফোনটি দেশে যায় তখন তা রূপান্তরিত হয়ে টেলিটক নম্বর হয়ে যায়।
ফলে ফোন গ্রাহক বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন, তাই ধরেন না। তার পরও ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়।
উদাহরণ- আমি গতকাল রাত ১২টা ১৪ মিনিটে অর্থসচিবকে ভয়ে ভয়ে একটি মেসেজ পাঠালাম। আমি অবাক তিনি সঙ্গে সঙ্গে তার উত্তর দিলেন দেখে। কারণ অত রাতে কেউ জেগে থাকার কথা নয়।
দেশে থাকতে আমরা সহকর্মীদের মাঝে এই এটিকেট-টি চালু করার চেষ্টা করেছি, পরিচিত-অপরিচিত সবার ফোন ধরার। না পারলে মেসেজ দেয়া, তাও না পারলে পরে কলব্যাক করা। এই নিয়ম মানতে গিয়ে কত বিপদে পড়েছি তার শেষ নেই। তবু তা অব্যাহত রেখেছি এ পর্যন্ত। তবে আমার অভিজ্ঞতা এবং ধারণা আমাদের জেলা প্রশাসকগণ এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক নজির রেখে যাচ্ছেন।’
তিনি আরও লিখেছেন– ‘আমার বন্ধুদের কেউ কেউ অনুযোগ করেছেন, আমিও দেশে থাকতে একই কাজ করেছি। অর্থাৎ অনেকের ফোন ধরিনি। এ রকমটি হয়ে থাকলে আমি তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি জেনেশুনে এ কাজটি কখনও করিনি। তবে ভিভিআইপি পরিবেশে বা মন্ত্রিসভা চলাকালে ধরার সুযোগ ছিল না। আবার প্রচণ্ড চাপের সময়ে ধরতে না পারলেও মেসেজ দেয়ার চেষ্টা করতাম বা পরে ব্যাক করতাম।’
‘মন্ত্রিসভার সদস্য বা ব্যস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে কথা উঠেছে। আমি তাদের মাঝে responsiveness অনেক বেশি দেখেছি। উদাহরণ হিসেবে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত স্যারের কথা বলতে পারি। তিনি এক্ষেত্রে role model.’
শফিউল আলম লেখেন- উন্নত বিশ্বে ফোন না ধরাটা রীতিমতো অভদ্রতা। কোনো কোনো দেশে তা অপরাধও বটে। আসুন আমরা সবাই জনবান্ধব হই, সেবাপ্রার্থীদের ব্যথা বোঝার চেষ্টা করি, তাদের ডাকে সাড়া দিই- অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশ না হলে পরিচিত-অপরিচিত সবার ফোন ধরি।’
এর পর রাতে আরও একটি স্ট্যাটাস দেন শফিউল আলম। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন– ‘পুনশ্চঃ ফোন নিয়ে পোস্ট দেয়ার উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত দেয়া নয়, সহকর্মীদের সেনসিটাইজ করা মাত্র।’