বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘আগামী মাসগুলো বিএনপির জন্য পরীক্ষা। এখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার সমঝোতায় না আসলে রাজপথে কঠোর আন্দোলন ছাড়া বিএনপির সামনে আর কোনো বিকল্প থাকবে না।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবে শুক্রবার এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সভার আয়োজন করে ‘জিয়া নাগরিক ফোরাম’।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘একদিকে সরকার বলছে দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার ওকালতনামায় স্বাক্ষর নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই দ্বিমুখী নীতির কারণেই খালেদা জিয়ার কারামুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে। তিনি মুক্তি পাবেন। মুক্ত হয়ে জনগণের মাঝে আসবেন। খালেদা জিয়া ছাড়া বাংলাদেশে কোন সাধারণ নির্বাচন হবে না, হতে পারে না। কারণ এই নির্বাচন কখনোই দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি সরকার যদি মনে করেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচন করবেন। তাহলে তারা দিবাস্বপ্ন দেখছেন। এই স্বপ্ন কোনো দিন বাস্তবায়িত হবে না। সবকিছুরই একটা সীমা আছে। এই সরকার সেই সীমা পেরিয়ে গেছে।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দেশের জনমতের প্রতিফলন ঘটেছে বলে দাবি করেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু হলে বিএনপি জোট ও আওয়ামী লীগ জোটের আসন তফাৎ হবে ৭৫ শতাংশ। অর্থাৎ বিএনপি জোট ৭৫ শতাংশ আর আওয়ামী লীগ জোট ২৫ শতাংশ। এটাই হলো সত্যিকারের বর্তমান জনমত।’
খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে দল ভাঙার সরকারের স্বপ্নপূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার কারাবন্দির কারণে তারা (সরকার) যে আশাটা করেছিল সেই আশাভঙ্গ হয়েছে। উনি (খালেদা জিয়া) বেরিয়ে আসুক আর কারাবন্দি থাকুক বিএনপি ঐক্যবদ্ধ থাকবে। এই ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব সারাদেশে নেতা-কর্মীদের সংঘবদ্ধ করবে। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে।’
তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার চার ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ করে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি লাভের উৎসব করা হয়েছে। যেখানে গণতন্ত্র নাই, সেখানে উন্নয়নশীলতা অর্থহীন। এর কোনো অর্থ বাংলাদেশের মানুষের কাছে নেই। কারণ যেদেশে বিচার, আইনের শাসন, নির্বাচিত সংসদ, গণতান্ত্রিক অধিকার থাকে না। যে দেশে বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেত্রীকে কারাবন্দি অবস্থায় রাখা হয়, সেদেশে উন্নয়নশীলতার ব্যাপারে দেশের মানুষ মোটেও সম্পৃক্ত হতে চায় না। তারা এই উন্নয়নশীলতার কোনো সুফল পায়নি এবং পাবে না।’
সংগঠনটির সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ারের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।