বাংলাদেশ সফররত তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ও তুরস্ক একযোগে কাজ করে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের প্রতি তুরস্কের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েপ এরদোগানকে ধন্যবাদ। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুই দেশের মধ্যে দু’টি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপর এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আলোচনায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকটসহ দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করতে এবং পরস্পরকে সহযোগিতা চালিয়ে যেতে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি।’
বৈঠকে তাদের মধ্যে দু’দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, পর্যটন, যোগাযোগসহ প্রধান প্রধান খাতে নিজেদের সহযোগিতা জোরদারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
দু’দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও পারস্পরিক স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে বাংলাদেশ ও তুরস্ক একমত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমাদের উন্নয়ন যাত্রায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে তুরস্ক।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শিমুল হলে দুই নেতার একান্ত বৈঠক শেষে চামেলী হলে দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন তারা। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে করবী হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন এবং পণ্যের মাণ নিয়ন্ত্রণে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়াতে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
দু’টি সমঝোতা স্মারকের একটি বাংলাদেশের এসএমই ফাউন্ডেশন ও তুরস্কের এসএমই ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের মধ্যে এবং অন্যটি হয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এবং টার্কিশ স্ট্যান্ডার্ডর্স ইনস্টিটিউশনের মধ্যে।
এরআগে বিকেল ৩টার দিকে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার রাতে দু’দিনের সরকারি সফরে ঢাকা আসেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি মঙ্গলবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান। পরে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। রাতে তার সম্মানে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৈশভোজে অংশ নেবেন তিনি।
আগামীকাল বুধবার সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার কথা রয়েছে বিনালি ইলদিরিমের। সেখানে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ওইদিনই তুরস্কের উদ্দেশে কক্সবাজার ত্যাগ করার কথা রয়েছে তার।