গত এক মাস ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের টানপোড়েন চলছে। সর্বশেষ সোমবার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। শুধু তাই নয়, পশ্চিমা দেশগুলোর হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনারা প্রবেশ করেছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে যুদ্ধের আশঙ্কাই বেশি। বিশ্বের সামরিক শক্তিধর ১৪০টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ার সঙ্গে ২২তম অবস্থানে থাকা ইউক্রেনের যুদ্ধ যে অসম হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট গ্লোবার ফায়ারের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার সৈন্য সংখ্যা আট লাখ ৫০ হাজার এবং ইউক্রেনের সৈন্য সংখ্যা দুই লাখ। তবে উভয় দেশের রিজার্ভ সৈনিকের সংখ্যা প্রায় সমান-আড়াই লাখ। রাশিয়ার আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা আড়াই লাখ এবং ইউক্রেনের রয়েছে মাত্র ৫০ হাজার।
রাশিয়ার এয়ারক্রাফটের সংখ্যা চার হাজার ১৭৩টি এবং ইউক্রেনের মাত্র ৩১৮টি। রাশিয়ার রয়েছে ৭৭২টি যুদ্ধবিমান থাকলেও ইউক্রেনের রয়েছে ৬৯টি।
রাশিয়ার মোট হেলিকপ্টার রয়েছে এক হাজার ৫৪৩টি। এর মধ্যে অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে ৫৪৪টি। অন্যদিকে ইউক্রেনের হেলিকপ্টার রয়েছে ১১২টি এবং এর মধ্যে অ্যাটাক হেলিকপ্টার ৩৪টি।
স্থলযুদ্ধের সরঞ্জামেও রাশিয়া অনেক এগিয়ে। দেশটির মোট ট্যাঙ্ক রয়েছে ১২ হাজার ৪২০টি এবং ইউক্রেনের দুই হাজার ৫৯৬টি। সশস্ত্র যান রাশিয়ার রয়েছে ৩০ হাজার ১২২টি, ইউক্রেনের রয়েছে ১২ হাজার ৩০৩টি। স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি রাশিয়ার আছে ছয় হাজার ৫৭৪টি, ইউক্রেনের আছে এক হাজার ৬৭টি। রাশিয়ার মোবাইল রকেট প্রজেক্টর রয়েছে তিন হাজার ৩৯১টি, ইউক্রেনের আছে ৪৯০টি।
সামরিক নৌযানের দিক থেকে যথারীতি অনেক এগিয়ে রয়েছে রাশিয়া। দেশটির যুদ্ধজাহাজ ৬০৫টি থাকলেও ইউক্রেনের রয়েছে ৩৮টি। রাশিয়ার একটি বিমানবাহী রণতরী থাকলেও ইউক্রেনের তা নেই। রাশিয়ার ৭০টি সাবমেরিন থাকলেও ইউক্রেনের কোনো সাবমেরিন নেই। একইভাবে রাশিয়ার ডেস্ট্রয়ারের সংখ্যা ১৫টি, তবে এই তালিকায় ইউক্রেন শূন্য। ইউক্রেনের একটি ফ্রিগেট থাকলেও রাশিয়ার রয়েছে ১১টি। মাইন ওয়ারফেয়ার যুদ্ধজাহাজ ইউক্রেনের একটা থাকলেও রাশিয়ার রয়েছে ৪৯টি।
এর বাইরে রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। ২০২১ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার কাছে ছয় হাজার ৩৭২টি নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড মজুদ ছিল। এছাড়া রাশিয়ার রয়েছে এস-৪০০ নামের অত্যন্ত শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
বিপরীত দিক থেকে সাবেক সোভিয়েত আমলে ইউক্রেনের কাছে শতাধিক নিউক্লিয়ার ওয়্যারহেড থাকলেও ১৯৯৪ সালে বুদাপেস্ট চুক্তি অনুযায়ী, সবকয়টি ধ্বংস করে ফেলে কিয়েভ। আর আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে রাশিয়ার মতো শক্তিশালী ও কার্যকর ব্যবস্থাও নেই দেশটির।