রাশফোর্ড গর্জনে নক আউটে ‘থ্রি লায়ন্স’, প্রতিপক্ষ সেনেগাল

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

অথচ এক বছর আগে গেলেই রাশফোর্ডের রাজ্যে ছিল শুধু হতাশা। ইউরোতে ইতালির বিপক্ষে স্পট কিক মিস করে শিকার হয়েছিলে বর্ণ বৈষম্যের। বছর ঘুরতেই বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নায়ক। এখন পর্যন্ত হওয়া ম্যাচ শেষে কাতার বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতার একজন রাশফোর্ড। তার দিনে ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপে ফেরা ওয়েলসের স্বপ্নের ইতি ঘটে দুঃস্বপ্নের মতো।

ইরানকে হাফ ডজন গোল দিয়ে তর্জন-গর্জনে কাতার  বিশ্বকাপে  যাত্রা শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডের। মাঝের ম্যাচে ‘চুপ’ হয়ে গেলেও শেষ ম্যাচে একই রাজ্যের দেশ ওয়েলসকে গুঁড়িয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে গ্যারেথ সাউথ গেটের দল। নক আউটে তাদের প্রতিপক্ষ ২০ বছর পর শেষ ষোলোতে ওঠা সেনেগাল।

 

মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় আল রায়ানের আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে ‘লোকাল ডার্বি’ খেলতে নামে বৃহত্তর ব্রিটেনের দুই দেশ ইংল্যান্ড-ওয়েলস। রাশফোর্ডের জোড়া গোলে ৩-০ গোলে বেলের দলকে হারিয়েছে ইংলিশরা। বাকি গোলটি করেন ফোডেন।

৬৪ বছর পর বেলদের বিশ্বকাপে প্রত্যাবর্তবন সুখকর হলো না। ইংল্যান্ড ছাড়াও হারতে হয়েছে ইরানের কাছে। একমাত্র সাফল্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ড্র। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র। একটিও হারেনি তারা। দুটি ড্রয়ের সঙ্গে একটি জয়। ইরান একটি জয় পেলেও ওয়েলস তার মুখও দেখেনি।

 

ইংল্যান্ডের শেষ ষোলো এক প্রকার নিশ্চিত হয়েই ছিল। হালি গোলে যদি ওয়েলস তাদের হারাতো তাহলে বাদ পড়ার সম্ভাবনা থাকতো। সেটিকে তারা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। ২০০৬ বিশ্বকাপ থেকে এই প্রথম কোনো বিশ্বকাপে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে আসে ইংল্যান্ড। ৩ ম্যাচে ১০ গোল করেছে দলটি।

প্রথমার্ধ থেকেই আক্রমণের পর আক্রমণে ইংলিশরা বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল ওয়েলসকে। নিশ্চিত কয়েকটি গোল মিস না করলে সাফল্য আসতো অবধারিতভাবেই। বিরতির পরেই অবশ্য তা পুষিয়ে নেন তারা।

২৪ মিনিটে ডি বক্সের  একটু সামনে থেকে নিখুঁত এক পাস দেন কেন। সামনে ছিলেন রাশফোর্ড। গোলরক্ষককে একা পেয়েও রাশফোর্ড গোল দিতে পারেননি। মেরে দেন গোলরক্ষক ওয়ার্ডের সোজাসুজি। এখন পর্যন্ত ইংলিশরা ৪টি শট নেয়, যার মধ্যে এটিই ছিল অন টার্গেট।

 

৩৫ মিনিটে ডি বক্সে বল পেয়েছিলেন ফোডেন। প্রয়োজন ছিল একটি নিখুঁত শটের। বাঁ পায়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন। কিন্তু মেরে দেন বাইরে।

অবশেষে রাশফোর্ডের গোল। ইংলিশদের অপেক্ষার অবসান হলো। ৫০ মিনিটে অসাধারণ ফ্রিক কিক থেকে তিনি লক্ষ্যভেদ করেন।  ডান পায়ের জোরালো শটে বাম কোনা দিয়ে ঢুকিয়ে দেন ওয়েলসের জালে। হতভম্ব হয়ে যান গোলরক্ষক। তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছু করার ছিল না।

 

 

বিরতির পর দুই মিনিটে ইংল্যান্ডের দুই গোল। ৫১ মিনিটে নিজেদের ডিফেন্সে রাশফোর্ডের কাছে বল হারায় ইরান। এগিয়ে আসা বল পেয়েই বাম দিকে বাড়িয়ে দেন কেন। সেখানে থাকা ফোডেন দারুণ ক্রস শটে জড়িয়ে দেন জালে। এর আগে সহজ সুযোগ মিস করেছেন। এবার আর মিস হয়নি ফোডেনের।

 

 

 

দুর্দান্ত রাশফোর্ডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের গোলের সেঞ্চুরি।  সঙ্গে রাশফোর্ডের জোড়া গোল। ৬৮ মিনিটে ডান দিকে একাই ডি বক্সে ডুকে দুজনকে ফাঁকি দিয়ে নিখুঁত শটে তৃতীয়বারের মতো ওয়েলসের জালে বল জড়ান রাশফোর্ড। এটি রাশফোর্ডের দ্বিতীয় গোল। ৩-০ গোলে এগিয়ে ইংল্যান্ড। রাশফোর্ডের এই গোলের মাধ্যমে বিশ্বকাপের মঞ্চে ১০০ গোলের মাইলফলক অর্জন করে ইংল্যান্ড। ৭৪ মিনিটে রাশফোর্ডকে উঠিয়ে নেন কোচ।

শেষ দিকে আরও কয়েকটি সুযোগ পায় ইংলিশরা। কিন্তু লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি কেউই। পুরো ম্যাচে দাপট ছিল তাদেরই। মোট শট নিয়েছে ২৫টি। ৭টি ছিল অন টার্গেট। অন্যদিকে ওয়েলস নেয় মোটে ৮টি। বল দখলের লড়াইয়েও ছিল থ্রি লায়ন্সদের রাজত্ব। ৬৫ শতাংশ সময় বল ছিল তাদের পায়ে।