শিরোনামটা দেখে হয়তো অনেকেই অবাক হচ্ছেন! যে ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম কোনও চুরির ঘটনা সেটাও কি সম্ভব। কারণটাও যথার্থ কেননা দরিদ্র থেকে ধনী, উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশ সবর্ত্র ঘুষ, দুর্নীতি ও চুরি-চামারির ঘটনায় ভরপুর। কেউ ছিঁচকে চোর বা কেউ রাঘব বোয়াল, পার্থক্য এটুকুই।
তবে স্কটল্যান্ডের এক দ্বীপপুঞ্জের সত্যিকার গল্প মানুষকে সততা, বিশ্বস্ততা ও নৈতিকতা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে শেখাবে। সত্যিই আধুনিক পৃথিবীর মানুষ সভ্য হচ্ছে নাকি দিনে দিনে অসভ্যতার পরিমাণটাই বেড়েছে।
দ্বীপপুঞ্জটির নাম হেব্রিডিয়ান। সৃষ্টিকর্তা যেন অপরূপ প্রাকৃতিক শোভায় গড়েছেন এ দ্বীপ। জায়গাটা পিকচার পোস্টকার্ডকেও হার মানায়। সেইসঙ্গে হার মানায় রূপকথাকেও। হেব্রিডিয়ান দ্বীপপুঞ্জের একটি ছোট্ট দ্বীপ ‘ক্যান্না’ (Canna Island)।’ এ দ্বীপের মোট জনসংখ্যা মাত্র ২৬ জন।
বিগত পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে এ দ্বীপে কখনো কোনও চুরির ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সম্প্রতি এক ঘটনায় অবাক হয়েছে ক্যান্নার বাসিন্দারা। কিছুদিন আগে সে দ্বীপে একটি ছিঁচকে চুরির ঘটনা ঘটেছে। দ্বীপের ‘নীলমণি’ স্টোর থেকে চুরি যায় উলের ৬টি টুপি‚ ক্যান্ডি‚ কুকি‚ ব্যাটারি এবং প্রসাধনী।
এই দ্বীপে সবশেষ চুরি হয়েছিল উনবিংশ শতকের ষাটের দশকে। গির্জা থেকে খোয়া গিয়েছিল কাঠের প্লেট। তারপর চুরি কাকে বলে‚ ভুলতে বসেছিল স্থানীয় মানুষ। অপরাধের বিরলতায় এখানে কোনও থানাও নেই।
দ্বীপের ওই কমিউনিটি দোকানটি খোলা থাকে বছরের ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টা । যাতে মৎস্যজীবীরা রাত বা দিন যে কোনও সময় এসে পেতে পারেন দরকারি জিনিস। পাওয়া যায় ওয়াই-ফাই কানেকশনও। দোকানে কোনও কর্মীও থাকে না। উন্মুক্ত রাখা হয়েছে সব সামগ্রী। যার যেমন দরকার তুলে নিয়ে‚ লিখে রাখে নির্দিষ্ট খাতায়। তারপর টাকার বাক্সে দাম রেখে চলে যায়।
দ্বীপবাসীর ধারণা এমন কাজ সভ্য পৃথিবীর কোনও পর্যটকের। কারণ‚ ক্যান্নার বাসিন্দারা চুরি কি জিনিস সেটা ভুলেই গেছেন‚ না বলে পরের জিনিস কীভাবে নিতে হয় তা দ্বীপবাসীর নৈতিকতায় বিঁধে।
এই ছিঁচকে চুরির ঘটনার তদন্ত করেছিল স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত পুলিশ বাহিনী। তাদের বক্তব্য‚ চোর শুধু জিনিস নয়। সাথে নিয়ে গিয়েছে ক্যান্নাবাসীর বিশ্বাস এবং আস্থাও।