মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে দেশটির পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলায় অভিযুক্ত চার রোহিঙ্গা বিদ্রোহীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। ২০১৬ সালের অক্টোবরের ওই হামলার দায়ে শুক্রবার মংডু জেলার বিশেষ আদালত চার রোহিঙ্গাকে এ সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন।
দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতি বলছে, ওই বছরের ৯ অক্টোবর রাখাইনের মংডু জেলার উত্তরাঞ্চলের এনগা খুরা পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার দায়ে ৩০ রোহিঙ্গাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। হামলায় নিরাপত্তাবাহিনীর দুই কর্মকর্তা নিহত হয়।
মংডু জেলার উপ-বিচারক ইউ নিয়ো লিউইন ওও বলেন, দোষীদের মধ্যে চার রোহিঙ্গাকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি ২৬ জনকে ১০ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া সন্দেহভাজন ১৫ রোহিঙ্গাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
তিনি বলেন, হত্যার দায়ে আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। মিয়ানমারের দণ্ডবিধির ৩০৩, ৩২৬, ৩৩ এবং ৩৪ ধারায় মোট ৪৫ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এর আগে বুধবার পৃথক এক মামলায় নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলায় অভিযুক্ত ৩৪ রোহিঙ্গাকে ১৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।
মংডুর এ উপ-বিচারক বলেন, অপর একটি মামলায় বিশেষ আদালতে আরো ২৯৪ জন রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে শুনানি চলছে। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে।
এছাড়া গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার অভিযোগে ৭৬ রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাখাইনের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
রাখাইনের স্বাধীনতাকামী রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ২৫ আগস্টের ওই হামলার দায় স্বীকার করে। হামলায় অন্তত ১১ পুলিশ সদস্য নিহত হয়। দেশটির সরকার রোহিঙ্গাদের এ সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনে করে।
রাখাইনের অ্যাটর্নি জেনারেল ইউ কিয়াও হ্ল্যা তুন বলেছেন, ‘এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করায় হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে কেউ গ্রেফতার হলে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ গঠন করা হয়।’
মংডু জেলা অাদালত হামলায় সংশ্লিষ্ট সন্দেহে আরো ৫০৯ রোহিঙ্গাকে পলাতক ঘোষণা করেছেন; যারা বর্তমানে নিরাপত্তাবাহিনীর হেফাজতে নেই।
সূত্র : দ্য ইরাবতি।