মির্জাগঞ্জে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে খুন হয় অপি

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

কাতারে যাওয়ার জন্য প্রবাসী জাফর হাওলাদারকে টাকা দেয় প্রতিবেশি অপির পরিবার। ওই টাকা ফেরত চাইলে অপিকে খুনের ভুত চাপে জাফরের মাথায়।

আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। ওই স্বীকারোক্তির সুত্র ধরে ঘটনার ৮ মাসের মাথায় ঘটনার মাস্টারমাইন্ড পলাতক জাফরকে গ্রেফতার পটুয়াখালী ডিবি পুলিশ।

১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কদমতলীর এলাকার ফাল্গুনী কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন পিকাপ স্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার হয় জাফর।

পটুয়াখালী ডিবি পুলিশের ওসি একেএম আজমল হুদা এমন তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন। নিয়ে গ্রেফতার সংখ্যা তিন। পলতাক রয়েছে অন্যতম সহযোগী শামীম।

নিহত অপি মির্জাগঞ্জ উপজেলার চরখালী এলাকার অবসর প্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আলতাফ হোসেনের ছেলে। ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর খুন হয় বরিশাল হাতেম আলী কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র আরিফুর রহমান অপি।

আদালতে সাব্বিরের দেয়া স্বীকারোক্তির বরাতে ডিবি পুলিশ বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অপির বন্ধু সোলায়মান লিমন ও শরীফুল ইসলাম ওরফে সাব্বিরের সঙ্গে বাড়ীর পাশের পায়রা নদীর পাড়ে ঘুরতে যায় অপিও।

নদীর পাড়ে অবস্থান করে ডেনড্রাইট গামের নেশায় আসক্ত হয় অপি ও লিমন। কিছুক্ষন পরে অপির প্রাক্তন স্কুল সহপাঠি ও প্রতিবেশি মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে শামীম অপির মাথার নিচাংশে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে আঘাত করে।

এরপর জাফর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অপির সঙ্গে বিকবিতণ্ডায় জড়িয়ে অপির গলায় ব্যবহৃত মাফলারের এক পাশ নেটে ধরে এবং অপরপ্রান্ত শামীম নেটে ধরে মৃত্যু নিশ্চিৎ করে।

মৃত্যু নিশ্চিতের পরে চারজন একই সঙ্গে ঘটনা গোপন রাখার শপথ করে এবং রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে অপির মৃত দেহ পায়রা নদীতে ফেলে লিমন ও সাব্বির চরখালী বাজারে যায় এবং জাফর ও শামীম অন্যপথ ধরে স্থান ত্যাগ করে।

ঘটনার বরাতে ডিবি আরও বলেন, পাওনা টাকার সুত্র ধরে প্রতিবেশি জাফর হাওলাদার অপিকে খুনের পরিকল্পনা করে। যে ঘটনায় জাফররের সহযোগী ছিলেন প্রতিবেশি ও বন্ধু শরীফুল ইসলাম সাব্বির, সোলায়মান লিমন এবং শামীম।

বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ গত ২২ ফেব্রুয়ারী মামলাটির তদন্তভার দেয় ডিবি পুলিশকে।

১৩ এপ্রিল গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর আহসানুল উলুম কওমী মাদ্রাসা থেকে শরীফুল ইসলাম সাব্বিরকে গ্রেফতার করা হয়।

এরপূর্বে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ঘটনায় জড়িত অপির বন্ধু সোলায়মান লিমনকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাজাহানপুর ইউনিয়নের গজপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পটুয়াখালী র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা।

তবে র‌্যাবের হাতে আটক হওয়া লিমনের স্বীকারোক্তি নিয়ে ঘোর আপত্তি দিয়েছে নিহত অপির পরিবার। সাব্বির ও লিমন বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।

নিহত অপির বড় বোন ইয়াসমিন বলেন, প্রতিবেশি জাফর হাওলাদার কাতার প্রবাসী। ঘটনার দুই বছর পূর্বে অপিকে বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া প্রতিশ্রুতিতে তার আলতাব হেসেনের কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা নেয় জাফর।

প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের একপর্যায় কাতার থেকে জাফর বাড়ীতে আসলে জাফরের কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হলে জাফর টালবাহানা শুরু করে। খুনের ঘটনার আগের দিন এনিয়ে জাফরের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরে অপি।

এসময় জাফর অপিকে প্রাঁণ নাশের হুমকীও দেয়। কিন্তু আমরা বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করেছি। ২৮ ডিসেম্বর অপি নিখোঁজ হলে আমরা থানায় জিডি করি।

নিখোঁজের ৫ দিনের মাথায় পায়রা নদীর অপর প্রান্ত পটুয়াখালী সদর উপজেলা ছোচবিঘাই এলাকায় অপির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন বাবা।

 

অপরাধজাতীয়প্রচ্ছদ এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কমলাপুর রেলস্টেশনের ঘাস নিয়ে লাইভ করার পর এবার ট্রেনে ওঠার সময় নারী ও বৃদ্ধাদের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফের ফেসবুক লাইভ করলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে যারা রেলে চলাফেরা করেন তাদের প্রতি কি একটু সহায় হবেন- এমন আহ্বান জানান তিনি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেউ যদি বউ-বাচ্চা, বৃদ্ধা মা-বাবাকে নিয়ে ট্রেনে উঠতে চান তা হলে বউ থাকবে কই আর মা-বাবা থাকবে কই। শুক্রবার (৫ জুলাই) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফেসবুকে লাইভে এসে এসব কথা বলেন ব্যারিস্টার সুমন। লাইভে এসে প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনে ওঠার সিঁড়ির দূরত্ব দেখিয়ে সুমন বলেন, ‘এই ট্রেনটাকে মিটার গেজ (পরে সংশোধন করে বলেন ব্রডগেজ) বলা হয়। আমার প্রশ্ন হলো-প্ল্যাটফ্রম থেকে দূরত্ব বা উচ্চতা কত? ব্রিটিশ আমলের ট্রেনগুলো ছিল এমন। আপনারা (রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ) নতুন ট্রেন আনলেন কিন্তু প্ল্যাটফর্ম এখনো পুরনো।’ রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত লোকদের দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখেন সবাই, প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনের উচ্চতা দোতলার সমান। কোনো স্টেশনে ট্রেনটি তিন মিনিট থামে। তিন মিনিটে ৫০ জন মানুষ প্রায় দুই তলার সমান উচ্চতায় ওঠা কি সম্ভব?’ রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘রেলমন্ত্রী, ট্রেন আপনি অনেক উঁচু বানিয়ে দিছেন। আর প্ল্যাটফর্ম এখানে বিট্রিশ আমলের। আমি কমলাপুর সেন্ট্রাল স্টেশন থেকে বলছি। আর গ্রামের স্টেশনগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ। সেখানে ট্রেনে উঠতে তো রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। বউ বাচ্চা নিয়ে ওঠা একটা বে-ইজ্জতের কারবার।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুনিয়া এগোচ্ছে, সব কিছু এগোচ্ছে। রাতারাতি পরিবর্তন করতে পারবেন না। তবে ব্রেইনে আনেন পরিবর্তন করার। আপনারা বউ-বাচ্চা লইয়া ট্রেনে যাতায়াত করবেন কি-না জানি না। তবে, এই প্ল্যাটফর্ম ট্রেনের সমান করতে কোটি কোটি টাকার দরকার পড়বে না। আশা করি রেলমন্ত্রীসহ সকলেই এর প্রতি সদয় হবেন।’ এর আগে (৩০ মে) ব্যারিস্টার সুমন স্টেশনের সামনে রেললাইনের ওপর বেড়ে ওঠা ঘাস কেটে পরিচ্ছন্ন করার অনুরোধ জানিয়ে তার নিজের ফেসবুক পেজে লাইভ দেন। এর পরদিনই (শুক্রবার) সেসব ঘাস কেটে পরিষ্কার করে ফেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। পরিবারকে গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর জন্য ট্রেনে তুলে দিতে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সেখানে তিনি দেখেন, রেললাইনের ওপর বড় বড় ঘাস জন্মেছে। যা কাটার জন্য কারো সময় নেই। ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘রেলের সময় নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। মোটামুটি ভালোই চলতেছে। এজন্য রেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।’ ওই লাইভে তিনি আরও বলেন, এটা দেশের সবচেয়ে বড় রেলস্টেশন। এটা কেন্দ্রীয় রেল স্টেশন। এ সময় তিনি এক হাত লম্বা লম্বা ঘাস দেখিয়ে বলেন, ‘কিছু লোক লাগিয়ে ঘাসগুলো পরিষ্কার করলে স্টেশনটা অনেক সুন্দর হয়ে যেত।’
৬ years ago