আল আমিন গাজী ॥ ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’ সেই স্লোগানকে সামনে রেখে নানা উদ্যোগ হাতে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন কারা কতৃপক্ষ। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার সমন্বয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের মাদকসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে জেলার মোঃ ইউনুস জামান ও সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বিগত ছয় মাসে নানা কর্মপরিকল্পনা প্রয়োগ করে তা বাস্তবায়ন করেছেন।
কারাগার থেকে মুক্ত একাধীক বন্দী জানায়, যেখানে এক সময় মাদক থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মকান্ড চালাতো কয়েদী-হাজতীরা। বর্তমানে সাধারন কয়েদী ও হাজতীরা সুন্দর ভবে জীবনযাপন করছেন। কারন কারাগারে এখন আর মাদক, মোবাইল ফোন ,মেমোরিকার্ড, সিম, নগদ টাকা নেই। বর্তমান জেলার ইউনুস জামানের নেতৃত্বে তল্লাশিও কড়া নিরাপত্তায় মাদক ও দূর্নীতি মুক্ত রয়েছে কারাগার।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার এখন আর সাধারন কয়েদী-হাজতিদের দুঃখ, কষ্ট করে সাজা ভোগ করতে হয় না। প্রয়োজনীয় নানা উদ্যোগ ও জেলার ইউনুস জামানের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় কারাগার এখন হয়ে উঠেছে ক্রমশ শোধনাগার হিসেবে।
কারাগার সূত্রে জানাযায়, বিগত কয়েক মাস আগে কারারক্ষীরা মাদক বহন করে কারাগারের ভিতর কয়েদীদেরে কাছে বিক্রি করতো। পরে সেই মাদক কয়েদী ও হাজতিদের ওর্য়াডে বিক্রি করতো। তা ছাড়া যে মাদক মুক্ত কারাগার বরিশালবাসীকে উপহার দেয়ার কথা ছিলো। সেখানে চলতো খোলামেলা মাদক সেবন। জেলার ইউনুস জামান কারাগারে যোগদান করার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে মাদকসহ একাধীক কারারক্ষী আটক হয়।
সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্ত পাওয়া বেলাল হোসেন বলেন, জেলার স্যার বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করে মাদক, নগদ টাকাসহ আসামিদের নানান অপকর্ম হাতে-নাতে ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করছে । আগের তুলনায় খাবারের মান পরির্বতন করছে স্যার। এখন মানসম্মত খাবার পেট ভরে সব বন্দীরা খেতে পারি। বর্তমানে গাছে আম, কাঁঠাল, লিচুসহ কারাগারে ভিতর সব ফল খাইতে পারছি মোরা সবাই। জেলার স্যার আগে কারাগারকে পরির্বতন করেছে। আগের তুলনায় এখন মোগো বিনোদনের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে টেলিভিশন, ফ্যান, ফুটবল, কেরাম, দাবা, কাবাডি ও লুডু , গান বাজনা করার জন্য ঢোল-তবলা, বাঁশি ও হারমোনিয়াম বেহালার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
এ বিষয় জেলার ইউনুস জামান বলেন, তিনি যোগদানের ৭ মাসের মাথায় কারাগার থেকে মাদক, সিম, মোবাইল ফোন, নগদ টাকামুক্ত করতে সফল হয়েছেন। তা ছাড়া এখন গেট থেকে শুরু করে কারাগারে ভিতর প্রবেশ পর্যন্ত ৫ স্থানে বন্দীদের চেক করা হয়। তা ছাড়া কারাগার এখন প্রতিটি স্থানে সিসি ক্যামেরা আওয়াতাধীন রয়েছে।
তিনি আরো জনান- রমজান মাসে যে বন্দীরা ইফতারে ঠান্ডা পানি পান করতে পারে সেই জন্য ২টি কোল্ড ফিল্টারে ৮টি কল বসানো হয়েছে। গত ৭ মাসে প্রায় ২৭৫ জন বন্দীকে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। হাজতি বা কয়েদিরা যাতে জেল থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে তার জন্য নিরক্ষরতা দূরীকরণ, ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে নিজ নিজ ধর্ম পালনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য হস্তশিল্প প্রশিক্ষন ও বিশেষ করে মহিলাদের জন্য সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাদক থেকে সড়ে আসার জন্য বন্দীদের নিয়ে প্রতিমাসে মিটিং করা হয়।
এ ছাড়া যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় কারা কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক নজরদারি ও প্রস্তুত রয়েছে।