সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে কি দুর্দান্তই না খেলেছিল পর্তুগাল। একেবারে ছিড়ে-ফুঁড়ে তাদের ৬-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এলো। তাদের ছান্দসিক এমন দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের পর ফুটবলপ্রেমীরা ধরেই নিয়েছিল মরোক্কো স্রেফ উড়ে যাবে। কিন্তু শনিবার রাতে মরোক্কান রূপকথায় আঁটকে গেল পর্তুগালের ছন্দ।
আগের ম্যাচের রেকর্ড গড়া হ্যাটট্রিককারী গনসালো রামোস আজ ছিলেন নিজের ছাঁয়া হয়ে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ম্যাচ ৪০ মিনিট বাকি থাকতে নামেন। তাতে তাদের দলের আক্রমণের ধার বাড়লেও ইয়াসিন বুনু নামক অভেদ্য দেয়াল আর ভেদ করতে পারেনি পর্তুগীজরা। তাতে করে ১৬ বছর পর সেমিফাইনালে ওঠা হয়নি তাদের। ৪২ মিনিটে ইউসুফ এন-নেসেরির করা গোলটিই রোনালদো-পেপেদের ছিটকে দেয় বিশ্বকাপ থেকে। চোখের জলে বিদায় নেয় সাবেক ইউরোপ সেরারা।
অন্যদিকে পর্তুগালের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিয়ে ইতিহাস গড়ে মরোক্কো। প্রথম কোনো আফ্রিকান দল হিসেবে পৌঁছে গেল সেমিফাইনালে। তাদের আগে ক্যামেরুন ১৯৯০ সালে, সেনেগাল ২০০২ সালে ও ঘানা ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল খেললেও শেষ চারে যেতে পারেনি। একমাত্র দল হিসেবে এখন পুরো একটি মহাদেশের স্বপ্নকে বহন করে চলছে আচরাফ হাকিমি ও হাকিম জিয়েখরা।
গ্রুপপর্বে তারা আগের আসরের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়াকে গোলশূন্য ড্রয়ে রুখে দিয়েছিল। এরপর র্যাংকিংয়ে উপরের দিকে থাকা দল বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়ে এবং শেষ ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতে ‘এফ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় মরোক্কো। এরপর শেষ ষোলোতে স্পেনের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলকে টাইব্রেকারে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আসে। আর কোয়ার্টারে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে।
আশ্চর্যজনক বিষয় হলো এবারের বিশ্বকাপে মরোক্কো পাঁচ ম্যাচ খেললেও প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়াড় তাদের জালে বল জড়াতে পারেনি। কানাডার বিপক্ষে যে একটি গোল হজম করেছিল সেটিও ছিল আত্মঘাতী। তাদের ইয়াসিন বুনু যেভাবে গোলপোস্ট সামলাচ্ছেন তাতে মরোক্কো ফাইনালে পৌঁছে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এখন দেখার বিষয় রূপকথার জন্ম দিয়ে চলা মরোক্কো ঠিক কোথায় গিয়ে থামে।