ভোলায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের রবিশস্য

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের রবিশস্য। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়ায় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা সম্মিলিতভাবে কৃষকদের ধান কাটতে জমিতে নামলেও ফটোসেশন ও অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবক অনভিজ্ঞতা হওয়ায় খুব বেশী লাভবান হতে পারছে না কৃষক।

 

শ্রমিক অভাব ও টানা বৃষ্টিতে কৃষকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। বৃষ্টি আর ঢলের কারণে ফসলি জমি ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তারা।

 

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ভোলার বিভিন্ন জায়গায় ফসলি জমির প্রচুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। বৃষ্টির পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে সেই এলাকার অধিকাংশ রবিশস্য জমি। এতে ফসলহানির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

 

কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, নদী তীরবর্তী রাজাপুর, ইলিশা ধনিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের নদনদী তীরবর্তী এলাকার চাষিরা রবিশস্য চাষ করেছেন। বৃষ্টির কারণে রবিশস্যগুলো জমির সাথে ঝুলে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রবিশস্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বোরো ধান, ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, মুগডাল বাদামসহ অন্যান্য ফসল।

 

তারা জানান, সময়মতো সোনালি ফসল ঘরে তুলতে না পারলে পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যান্য বছর বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় অধিক শ্রমিক দিয়ে তড়িঘড়ি করেই ধান কাটিয়ে নিলেও এবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চলমান ‘লকডাউন’। এবার করোনাভাইরাসের শঙ্কায় এবং লকডাউন থাকায় যারা অন্যান্য বছর রবিশস্য/ধান কাটতে আসতেন, তারাও আসতে পারছেন না। শতভাগ ধান পাকতে আরো একসপ্তাহ সময় লাগবে।

 

ইলিশা ইউনিয়নের সোনাডগী গ্রামের আসমত আলী জানান, জমির পুরো ধান এখনো পাকেনি। যেগুলো পেকেছে বৃষ্টির জন্য তাও কেটে আনতে পারছি না। সপ্তাহ খানেক সময় পেলে সব ধান বাড়িতে তুলতে পারতাম। করোনার কারণে আমাদের একমাত্র ভরসা ধানী জমি।

 

ধান নষ্ট হলে প্রাণে বাঁচা দায় হয়ে দাঁড়াবে। রাজাপুর ইউনিয়নের কন্দকপুর গ্রামের মরিচ চাষি আবুল কালাম সরদার বলেন, আমি দের একর জমিতে ২০ হাজার টাকার মরিচের বীজ রোপণ করেছি। বৃষ্টিতে সকল মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে।

 

 

সদর উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন আহমেদ জানান, এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলন ভালো হয়েছে। শতভাগ ফসল পাকতে আরো ১৫ দিন সময় লাগবে। ভোলায় জেলায় মোট আবাদি ফসলি জমি রয়েছে এক লাখ ৮৬ হাজার ৩’শ হেক্টর। জেলায় মোট রবিশস্য চাষ হয়েছে এক লাখ ৯২ হাজার ৫ শত তিন হেক্টর জমিতে। কোন কোন জমিতে একাধিকবার রবিশস্য চাষ করা হয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, জেলায় শ্রমিক সংকট না থাকায় আসা করা যায় ফসল সরবরাহে কোন সমস্যা হবেনা ভোলার কৃষকদের।