ভোলার দৌলতখান উপজেলায় রত্না (২০) বেগম নামে এক গৃহবধূকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগে স্বামী মো. রাসেল হোসেন ও শাশুড়ী নিলুফা বেগমকে আটক করেছে দৌলতখান থানা পুলিশ।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার চর খলিফা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আলাউদ্দিন মিস্তিরি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত রত্নার মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রত্না একই উপজেলা সৈয়দপুর ইউনিয়ন ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. নসু বেপারীর মেয়ে।
মেয়েকে স্বামী ও শাশুড়ী যৌতুকের জন্য গলাটিপে হত্যা করেছে দাবি করে নসু বেপারী বলেন, ১০ মাস আগে রাসেলের সঙ্গে পারিবারিকভাবে রত্নার বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের সময় জামাই রাসেলকে যৌতুক হিসেবে একটি মোটরসাইকেল ও ব্যবসার জন্য দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। রাসেল ওয়ার্কস ব্যবসায়ি। যাঁর জন্য ব্যবসা প্রসারের জন্য ওই মোটরসাইকেল ও দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়।
বিয়ের কয়েকমাস তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের কাটলেও বিগত ৩ মাস ধরে রাসেল ও তাঁর পরিবার আমার কাছে (শশুর) আরো ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমার কাছে তাদের চাহিদার পর্যাপ্ত টাকা নেই। সেজন্য তাদেরকে বলে দেয়া হয়েছিল আমি টাকা দিতে পারব না। সেই জের ধরেই জামাই রাসেল ও তাঁর মা নিলুফা বেগম গলাটিপে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। তাঁর দাবি রত্না ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।
অন্যদিকে স্ত্রী হত্যা অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক রাসেল দাবি করছে, তাকে (রত্নাকে) গলাটিপে হত্যা করা হয়নি। বেশকিছু দিন ধরে রত্না পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়ে। ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সে (রত্না) মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত লোকের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছিল। বিষয়টি তিনি টের পেয়ে রত্নার কাছে জানতে চেয়েছিল অজ্ঞাত লোকটি কে ছিল ? রাসেলের দাবি তাঁর প্রশ্নের কোনো সদুত্তর রত্না দিতে পারেনি। এ সময় তাদের দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে রত্না গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
দৌলতখান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন রত্নাকে তাঁর বাবা নসু বেপারী ঘরের সামনের খাটে শুয়ে রেখেছে। রত্নার সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশের এ কর্মকর্তা মনে করছেন তাকে গলাটিপে হত্যা করা হতে পারে। রত্নার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা থাকার বিষয়ে তিনি জানান, রত্না ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন গেল মাসে তাঁর বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। যাঁর ফলে মৃত্যুর সময় রত্না অন্তঃসত্ত্বা ছিল না।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন জানান, নিহতের বাবার অভিযোগে রাসেল ও নিলুফাকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। রত্নার বাবা বাদী হয়ে দৌলতখান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মামলা দায়ের হওয়ার পর আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।