পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে দলবদলকারীদের, বিশেষ করে নব্য বিজেপি নেতাদের। হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া এবারের নির্বাচনে হেরেছেন এমন বেশিরভাগ প্রার্থী। তাদের ব্যর্থতায় বঙ্গের সিংহাসন দখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুসারে, মাত্র তিন-চারজন ছাড়া বিজেপির টিকিটে নির্বাচনে দাঁড়ানো অধিকাংশ দলবদলকারী নেতা হেরে গেছেন তৃণমূল প্রার্থীদের কাছে। এর মধ্যে ব্যতিক্রমীদের তালিকায় শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়, মিহির গোস্বামীরা। তাদের বাদ দিলে দল বদলানো শতাধিক নেতা হেরেছেন বড় ব্যবধানে।
তৃণমূল কংগ্রেসে বিরোধী হাওয়া কাজে লাগিয়ে গত দুই-তিন বছরে প্রচুর নেতাকে দলে ভিড়িয়েছিল বিজেপি। তবে দুর্ভাগ্য, যে আশায় তাদের দলে টেনেছিল পদ্ম শিবির, তা পূরণ হয়নি। তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছ থেকে ‘গাদ্দার’ স্বীকৃতি পাওয়া প্রায় সবাই হেরেছেন এবারের নির্বাচনে।
এদের মধ্যে রয়েছেন বালির বিজেপি প্রার্থী বৈশালী ডালমিয়া, শিববুরের রথিন চক্রবর্তী, পাণ্ডবেশ্বরের জিতেন্দ্র তিওয়ারি, শিলভদ্র দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো আলোচিত নেতারাও।
তবে এর মধ্যেও শেষ হাসি হেসেছেন নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেয়া শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়। দক্ষিণ কৃষ্ণনগর আসন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন মুকুল রায়। আর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামের ‘প্রেস্টিজ ফাইট’-এ হারিয়েছেন শুভেন্দু।
সিঙ্গুর আসনে তৃণমূলের বেচারাম মান্নার কাছে হেরেছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ওদিকে মুকুল রায় জিতলেও হেরেছেন তার ছেলে শুভ্রাংশু রায়। কালনা আসনে হেরেছেন বিশ্বজিত কুণ্ডু।
তৃণমূলের সঙ্গ ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যাওয়া টালিউড তারকা রুদ্রনীল হেরেছেন ভবানীপুর আসন থেকে। ডায়মন্ড হারবার থেকে ধরাশায়ী হয়েছেন দীপক হালদার।
২০১৭ থেকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়া মোট ১৪০ জনকে এবার মনোনয়ন দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। তাদের মধ্যে ফেল করেছেন বেশিরভাগ নেতা।
এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, এটি সত্য যে, আমরা এমন ফলাফল আশা করিনি। আমাদের দেখতে হবে কোথায় ভুল হয়েছে।
এ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি যেভাবে পশ্চিমবঙ্গ দখল করতে চেয়েছিল, সেই পরিকল্পনার বিরোধিতারই প্রতিফলন এই ফলাফল।