 
                                            
                                                                                            
                                        
ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের ওপর দু’মাসের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টা থেকে।
নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় জাল, নৌকা, ট্রলারসহ সকল সামগ্রী নিয়ে একে একে তীরে ফিরেছেন ভোলার জেলেরা।
সোমবার দুপুরের দিকে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া তুলাতুলি ও ইলিশা জংশন ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, তীরে ফিরেই কেউ কেউ জাল গুছিয়ে বস্তা ভর্তি করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন আবার কেউ ট্রলারের ইঞ্জিন খুলে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
ধনিয়া তুলাতুলি গ্রামের জেলে মো. আবুল কাশেম মাঝি জানান, সরকার ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা নদী থেকে জাল ও নৌকা-ট্রলার উঠাইয়া তীরে চলে আসছি। এ দুই মাস আমরা নদীতে যাবো না।
তীরে ফিরেছেন জেলেরা, দাবি কিস্তি বন্ধের একই গ্রামের জেলে মো. মিজান মাঝি বলেন, প্রতি বছর সরকার দুই মাসের অভিযানে আমাদের জেলেদের জন্য যে চাল দেয় এবার সেটা দু‘এক দিনের মধ্যে বিতরণ করলে আমাদের জন্য ভালো হবে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যেন চাল দ্রুত বিতরণ করে।
ইলিশা জংশন এলাকার জেলে মো. ইউসুফ মাঝি ও কামরুল মাঝি বলেন, আমরা জেলেরা বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা, ট্রলার ও জালসহ মাছ শিকারের সামগ্রী কিনেছি। মাছ শিকার করে আমাদের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়।
দুই মাসের অভিযানের মধ্যে আমাদের আয়-ইনকাম বন্ধ থাকবে। তাই কিস্তির টাকা দিতে পারবো না। আমরা সরকারের কাছে দাবি করছি সরকার যাতে কিস্তির টাকা আদায় দুই মাসের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।
তীরে ফিরেছেন জেলেরা, দাবি কিস্তি বন্ধের তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার মো. আব্দুল খালেক জানান, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা তাদের সংসার পরিচালনা করার জন্য আমাদের কাছে দাদনের জন্য আসবে।
কিন্তু আমাদের ব্যবসা ভালো না হওয়ায় আমরা দাদন কিভাবে দেবো জানি না। আমরা ব্যবসায়ীরাও অনেক বিপাকে রয়েছি।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন জানান, ভোলার ইলিশা থেকে চর পিয়াল মেঘনা নদীর শাহবাজপুর চ্যানেলের ৯০ কিলোমিটার ও ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার তেতুলিয়া নদী ইলিশের আভয়াশ্রমের অন্তর্ভুক্ত। এ অভয়াশ্রমে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সকল প্রকার মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ইতোমধ্যেই আমরা ভোলার বিভিন্ন মৎস্য ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জনসচেতনামূলক সভা, মাইকিং, পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ করেছি।
তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। তীরে ফিরেছেন জেলেরা, দাবি কিস্তি বন্ধের।
তিনি আরো জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে। আমরা আশা করছি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সেটি বিতরণ শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ভোলার সাত উপজেলায় সরকারি নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলে প্রায় ৩ লাখ জেলে রয়েছেন। এদের মধ্যে সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার।