ব্যাংক লেনদেন চলবে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এ পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিংসেবা চালু থাকবে।

লকডাউনের সাতদিন দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলো সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গ্রাহক লেন‌দেন কর‌তে পার‌বে। অর্থাৎ লেনদেন হবে আড়াই ঘণ্টা, ব্যাংক খোলা থাকবে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

রোববার ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব সাইট সুপারভিশন থেকে এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো হয়েছে।

ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে জারি করা নির্দেশনাগুলো হলো-

১. ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত দৈনিক ব্যাংকিং লেনদেনের সময়সূচি সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা এবং প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

এ সময় লেনদেন চলাকালীন নির্দেশনা হলো-

ক. ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাসমূহে জরুরি ব্যাংকিংসেবা প্রদান অব্যাহত/নির্বিঘ্ন রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জনবলের বিন্যাস ও উপস্থিতির বিষয়টি ব্যাংক স্বীয় বিবেচনায় সম্পন্ন করবে। এক্ষেত্রে শাখার নিকটবর্তী স্থানে বসবাসরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতির বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা যেতে পারে। জনস্বার্থে ব্যাংকিংসেবা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি ও অফিসের কর্মপরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সংক্রান্ত সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালনের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।

খ. গ্রাহকদের হিসাবে সর্বপ্রকার জমা এবং উত্তোলন, ডিমান্ড ড্রাফট/পে-অর্ডার ইস্যু ও জমা গ্রহণ, ট্রেজারি চালান গ্রহণ, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় প্রদত্ত ভাতা/অনুদান বিতরণ, বৈদেশিক রেমিট্যান্সের অর্থ পরিশোধ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃশাখা অর্থ স্থানান্তর, এনআরবি বন্ডে এবং বিভিন্ন প্রকার জাতীয় সঞ্চয় সার্টিফিকেটের মেয়াদপূর্তিতে নগদায়ন ও কুপনের অর্থ পরিশোধ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইউটিলিটি (যথা : গ্যাস/পানি/ বিদ্যুৎ/টেলিফোন) বিল গ্রহণসহ বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক চালু রাখা বিভিন্ন পেমেন্ট সিস্টেমের/ক্লিয়ারিং ব্যবস্থার আওতাধীন অন্যান্য লেনদেন সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

গ. নগদ জমা ও উত্তোলনের জন্য অনলাইন সুবিধাসংবলিত ব্যাংকসমূহের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের লেনদেনের সার্বিক সুবিধা নিশ্চিত করে সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরে কার্যরত যেসব ব্যাংকের দুই কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক শাখা রয়েছে, সেক্ষেত্রে সুবিধাজনক একটি শাখা (অথরাইজড ডিলার শাখা ব্যতীত) হতে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার শর্তে অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। তবে বন্ধকৃত শাখার গ্রাহকগণের গ্রাহকসেবা প্রাপ্তি বিষয়ে অবহিত করতে উক্ত শাখার দৃশ্যমান স্থানে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া অনলাইন সুবিধাবহির্ভূত ব্যাংকের অন্যান্য শাখা খোলা রাখতে হবে।

ঘ. বিশেষ ব্যবস্থাধীনে ইতিপূর্বে মঞ্জুরিকৃত এবং বিতরণের অপেক্ষায় থাকা ঋণের অর্থ ছাড়করণ, বিভিন্ন প্রণোদনাগুচ্ছের আওতাধীন কার্যক্রম, শ্রমঘন শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যাবতীয় ঋণ নিয়মাচার পরিপালনপূর্বক রফতানি বিল ক্রয়, ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ অব্যাহত রাখতে হবে।

ঙ. গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বৈদেশিক লেনদেন সম্পাদনের জন্য বৈদেশিক বাণিজ্য (অথরাইজড ডিলার) শাখাসমূহেও লেনদেন অব্যাহত রাখতে হবে।

চ. সমুদ্র/স্থল/বিমানবন্দর এলাকায় (পোর্ট ও কাস্টমস এলাকা) অবস্থিত ব্যাংকের শাখা/উপ-শাখা/বুথসমূহ সার্বক্ষণিক খোলা রাখার বিষয়ে আগস্ট ৫, ২০১৯ এ জারিকৃত ডিওএস সার্কুলার লেটার নং-২৪ অনুসারে স্থানীয় প্রশাসনসহ বন্দর/কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিতপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৩. এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লেনদেন সময়সূচি ও কার্যক্রম বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসমূহ স্বীয় বিবেচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

৪. এটিএম ও কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত নোট সরবরাহসহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা সার্বক্ষণিক চালু রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এটিএম বুথগুলোতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা/স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্যাংকের সান্ধ্যকালীন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটিকালীন ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো।