ব্যবসার স্থানে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ না থাকলে আর্থিক জরিমানার প্রস্তাব করা হবে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে। রাজস্ব আদায়ের নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত এবং ব্যবসায় সমতামূলক প্রতিযোগিতা তৈরীর জন্য বেশ কয়েকটি নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির প্রভাব ক্রমাগত হ্রাস করে দেশে আনুষ্ঠানিক অর্থনীতিকে বিকাশের ক্ষেত্রে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, করজাল সম্প্রসারণ এবং কর পরিপালন বৃদ্ধি অন্যতম গুরত্বপূর্ণ নিয়ামক। বর্তমান সরকারের অনুসৃত কর নীতি হচ্ছে—করভিত্তি সম্প্রসারণের পাশাপাশি করহার ক্রমাগত যৌক্তিকীকরণ। এ নীতির পরিপালন করতে রাজস্ব আদায়ের নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত এবং ব্যবসায় সমতামূলক প্রতিযোগিতা তৈরীর ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর নতুন প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-
(ক) উৎসে কর কর্তন বা সংগ্রহের জন্য রিসোর্ট, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, কনভেনশন সেন্টারকে নির্দিষ্ট ব্যক্তির সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা।
(খ) ধারা ১৬৬ এর অধীন রিটার্ন দাখিলের আইনানুগ বাধ্যবাধকতা রয়েছে, এরকম সব ব্যক্তির ক্ষেত্রে ধারা ১৮০ এর অধীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল করার বিধান করা।
(গ) হোটেল, রেস্টুরেন্ট, মোটেল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নকালে এবং কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল বা সমজাতীয় কোনো সেবা গ্রহণকালে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা।
(ঘ) ব্যবসার স্থানে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ প্রদর্শনের ব্যর্থতায় অন্যূন ২০ হাজার টাকা এবং অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা।
(ঙ) রিটার্ন দাখিলে বাধ্য নয়, এরকম কোনো কোম্পানি কর্তৃক প্রাপ্ত যে কোনো প্রকারের গ্রস আয়, যা করমুক্ত নয় বা দান-অনুদান নয় বা কোনো প্রকারের কর, খাজনা ও শুল্ক নয়, এর ওপর কর আরোপ করা।
(চ) ধান, গম, গোল আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মটরশুটি, ছোলা, মশুর ডাল, আদা, হলুদ, শুকনো মরিচ, ডাল, ভুট্টা, মোটা আটা, আটা, লবণ, ভোজ্যতেল, চিনি, কালো গোল মরিচ, দারুচিনি, বাদাম, লবঙ্গ, ক্যাসিয়া পাতা, পাট, তুলা এবং সুতা ক্রয়ের জন্য স্থানীয় ঋণপত্র খোলা বা অন্য কোনো অর্থায়ন চুক্তির ক্ষেত্রে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিশোধিত বা ঋণকৃত পরিমাণের ওপর ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কর কর্তনের হার যৌক্তিকীকরণ।
(ছ) শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল, শ্রমিক কল্যাণ তহবিল এবং শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে প্রদেয় অর্থের বিপরীতে উৎসে কর কর্তনের বিদ্যমান বিধান অধিকতর সুস্পষ্টভাবে প্রতিস্থাপন।
(জ) কোনো সেলুলার মোবাইল ফোন অপারেটর কর্তৃক পরিশোধিত আয় বণ্টন বা কোনো লাইসেন্স ফি বা অন্য কোনো ফি বা চার্জ থেকে কর কর্তন করার হার বৃদ্ধি করা।
(ঝ) ট্রাস্ট, ব্যক্তিসংঘ, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সুদ আয় থেকে ২০ শতাংশ হারে এবং বিভিন্ন ফান্ড ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুদ আয় থেকে ১০ শতাংশ হারে কর কর্তন করা।
(ঞ) ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী থেকে বিদ্যুৎ কেনার বিপরীতে কর কর্তন করার হার যৌক্তিকীকরণ।
(ট) ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ এর অধীনে ইট প্রস্তুত বা উৎপাদনের লাইসেন্স প্রদান বা নবায়নের ক্ষেত্রে কর সংগ্রহের বিধান যৌক্তিকীকরণ।