 
                                            
                                                                                            
                                        
চিরচরিত নিয়মানুযায়ী যাত্রীসহ বর কনের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করেন। এবার ব্যতিক্রমি এক ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামে।
আনুষ্ঠানিকতা সেরে বউ নিয়ে বাড়ি ফেরেন সকলে। শনিবার দুপুরে বিয়ের কনে যাত্রীদের নিয়ে স্বয়ং বরের বাড়িতে হাজির হয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। যৌতুকমুক্ত বিয়ে ও নারী অধিকার নিশ্চিত করতে উভয় পরিবারের আয়োজনে এ বিয়ে বলে জানিয়েছেন তারা।
আড়ম্বরপূর্ণ বিয়ের আয়োজন। বরের বিয়ে বাড়ির আশেপাশে আয়োজনের কমতি নেই। রান্না চলছে আর দাওয়াতী মেহমানদের অভ্যর্থনা চলছে সকাল থেকেই। দৃষ্টিনন্দন বিয়ের গেটের দুই পাশে লাইনে দাঁড়ানো অসংখ্য মানুষ। বিয়ের বহর গেটের কাছে আসতেই এক অন্যরকম উত্তেজনাকর আনন্দ। মাইক্রোবাস থেকে নামলেন লাল বেনারসি শাড়ি পরা বধূবেশে কনে।
চুয়াডাঙ্গার হাজরাহাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের মেয়ে খাদিজা আক্তার খুশি কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজে অনার্স পড়ুয়া মেয়ে তার পরিবার ও সহযাত্রীদের নিয়ে বিয়ে করতে আসেন বর মেহেরপুরের গাংনীর চৌগাছার কমরেড আব্দুল মাবুদের ছেলে তরিকুল ইসলাম জয়ের বাড়িতে। ভিন্নধর্মী এ বিয়ের আয়োজন ঘিরে এলাকার মানুষেরও উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি ছিল না।
উৎসুক দৃষ্টিতে সবাই তাকিয়ে ছিলেন কখন আসবে কনে ও কনেযাত্রীরা। অবশেষে দুপুরে সাতটি মাইক্রোবাস ও ৩০টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে কনে এসে নামলেন বরের বাড়ির গেটের সামনে। প্রথানুযায়ী ফুল ও মিষ্টি মুখ করিয়ে কনেকে বরণ করেন বর পক্ষ। এরপর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
বিয়ের পর বর পক্ষের দাওয়াতী আত্মীয়-স্বজন ও কনে যাত্রীদের ভুড়িভোজ করানো হয়। বিকেলে বরকে নিয়ে কনে চলে যান তার বাবার বাড়িতে। সেখানে কয়েকদিন কাটানোর পর কনে সঙ্গে নিয়ে বর ফিরে আসবেন আপনালয়ে।
প্রতিক্রিয়ায় কনে খাদিজা আক্তার খুশি বলেন, নারী-পুরুষের সমান অধিকার হিসেবে একজন মেয়ে একজন ছেলেকে বিয়ে করতে তার বাড়িতে যেতে পারেন তা কখনও বাস্তবায়ন হয়নি। সেই বাধার বৃত্ত ভেঙে আমি শুরু করেছি আশা করছি অনেকেই এখন এটি করবেন।
বর তরিকুল ইসলাম জয় বলেন, বিয়েতে সবাই কনের বাড়িতে যায় আমার বিয়েতে কনে এসেছে বিয়ে করতে। বেশ ভালোই লাগছে।
বরের বাবা কমরেড মাবুদ বলেন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের অনেক কিছুই করার রয়েছে। মুখে আমরা বললেও তা বাস্তবায়ন করছি কতটুকু? তাই আমি এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি সামনে আনতে চেয়েছি।
নারী নেত্রী পারভীন বলেন, বরপক্ষ কনেপক্ষের বাড়িতে যাবে এটি প্রচলিত প্রথা। এ প্রথা ভেঙে কনেপক্ষ বরের বাড়িতে বিয়ে করতে আসছে তা অবশ্যই আনন্দদায়ক। মেয়েরাও পারে। মেয়েরা সব দিকেই আজ এগিয়ে যাচ্ছে। এ বিয়েতে সেটাই প্রমাণিত।