বিচ্ছিন্ন বরিশালে বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে, রাতেও এসেছে অনেক সমর্থক

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় বিভাগীয় শহর বরিশালে বিরোধী দল বিএনপি সমাবেশের একদিন আগেই সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে শহরটি অন্য সব জেলা ও উপজেলাগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সাথেই বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে শুক্রবার রাত থেকেই।এমনকি বরিশাল থেকে পার্শ্ববর্তী অন্য জেলা ও উপজেলায় কোন ধরনের গণপরিবহন চলাচল করছে না।

যদিও বিএনপির মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা নেতা জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন যে পটুয়াখালী, ভোলাসহ বেশ কিছু জায়গায় বিএনপি কার্যালয়ে হামলা হলেও বরিশালে সমাবেশ আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের দিক থেকে অসহযোগিতা তারা পাননি।

“বরিশাল ইতোমধ্যেই বিএনপি সমর্থকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বাধা দেয়া হতে পারে এমন কিছু জায়গার তালিকা আমরা প্রশাসনকে দিয়েছি। আশা করি তারা সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন,” বরিশাল থেকে  বলছিলেন তিনি।

নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যাকে বিএনপি বেলস পার্ক বলে সেখানে এখন সমাবেশের প্রস্তুতি কাজ চলছে।

দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা নানা উপায়ে বরিশালে সমবেত হতে শুরু করেছেন রাত থেকেই। অনেকেই রাতে তাঁবু টাঙ্গিয়ে সেখানেই অবস্থান করেছেন।

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরিশালে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে শনিবার।

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের জন্য প্রস্তুত বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যান। সেখানে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরিশালে পৌঁছেছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) বিলকিস জাহান শিরিন  বলেন, ‘সব ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা সভাস্থলে পৌঁছেছেন। রাতের মধ্যে সবাই পৌঁছবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার সকালে বরিশাল সদর উপজেলার সব ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী আসবেন। এই মাঠে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হবেন।’

বরিশাল মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। এছাড়া, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বরিশালের চরকাউয়া ও হিজলার খেয়াঘাট, মীরগঞ্জের আড়িয়াল খাঁ নদীতে ফেরী চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবুও নদীপথে ট্রলার ভাড়া করে হাজার হাজার নেতাকর্মী আসছেন।’

রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়ছিল। হিজলা, বরগুনা, ভোলাসহ নদী তীরবর্তী অঞ্চল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ট্রলারে সকাল থেকে বরিশালে আসতে শুরু করেন। রাস্তার মোড়ে, গাছতলায়, শিল্পকলা সব স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড় ছিল। সন্ধ্যায় বরিশালের হিজলা উপজেলা থেকে প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিয়ে ২৫-৩০টি ট্রলার কীর্তনখোলায় নোঙর করে।

সন্ধ্যার পরে পিরোজপুরের জাসাস শিল্পী গোষ্ঠী মঞ্চে উঠে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মধ্যরাত পর্যন্ত গণসংগীত পরিবেশন করে।

বরিশালের নদী বন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক জানান, বরিশাল নদী বন্দর থেকে শুধু ভোলার নয়, ঢাকা বরিশাল রুটসহ সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি ঢাকা থেকেও বরিশালের উদ্দেশ্যে কোনো লঞ্চ ছাড়েনি।

এদিকে, সন্ধ্যার পর ছাত্রলীগ নগরীর বিভিন্ন সড়কে শোডাউন করে। এসময় কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

এ বিষয়ে বরিশালের সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ জানান, আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত যুবলীগের সম্মেলন উপলক্ষে তারা মিছিল করেন। কাউকে বাধাগ্রস্ত করতে তারা মিছিল করেননি।