বিএনপি সুস্থ ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না: প্রধানমন্ত্রী

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বিএনপি সুস্থধারার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। কীভাবে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি করা যায়, তারা শুধু তা-ই জানে। বিএনপি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত।

২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় হতাহত ২৫ জনের পরিবারের কাছে সঞ্চয় সার্টিফিকেট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে ওই অনুষ্ঠান হয়।

গ্রেনেড হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগ এবং দলের অঙ্গসংগঠনের ২২ জন নেতা-কর্মী নিহত এবং বোমার আঘাতে পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। তাঁদের অনেকেই এখন দুর্বিষহ জীবন বয়ে বেড়াচ্ছেন। এই হামলায় শেখ হাসিনা অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও উপর্যুপরি বোমার শব্দে তিনি তাঁর শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেন।

আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত জোটের বিশাল ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হামলার কয়েক দিন আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আমি ভবিষ্যতে আর কখনো প্রধানমন্ত্রী, এমনকি বিরোধীদলীয় নেতাও হতে পারব না। খালেদা জিয়ার এ বক্তব্যের পরই এ হামলা হয় এবং এ থেকে বোঝা যায় এই অপরাধে কে জড়িত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সুস্থ ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তারা শুধু জানে কীভাবে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি করা যায়। বিএনপি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তারা সন্ত্রাস করে আমাদের অনেক নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে।’

তাঁকে হত্যা করতে কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের দুটি বোমা পুঁতে রাখার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হলো, তখনই আমার জীবনের ওপর হামলা হলো।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। যখনই তারা এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছিল, তখনই আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, আমাদের ওপর হামলা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর হামলাসহ সারা দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে দলের কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা যখন একটি সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ করছিলাম, ঠিক তখনই সন্ত্রাসের শিকার হলাম। ঘাতকেরা প্রকাশ্য দিবালোকে এ ধরনের অপরাধ করতে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।’ তিনি বলেন, ‘ঘাতকেরা ১৩টি গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। শত শত নেতা-কর্মী আহত হন। মেয়র মো. হানিফসহ দলের নেতাদের সৃষ্ট মানবঢালে আমি প্রাণে বেঁচে যাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, এ হামলার পর থেকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং তাঁর দলের পক্ষ থেকে ২১ আগস্টে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাধ্যমতো সহায়তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমি যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন তাঁদের সহায়তা দিয়ে যাব।’

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন হিসেবে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগের মূল শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা যেকোনো দুঃসময়ে দলের পাশে আছে এবং থাকবে।