প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির নেতা কে? তাদের কোনো নেতা নেই। বিএনপি চিন্তা করেছিল, নির্বাচন হবে না। এখন নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে। একসময় বলেছিল, নির্বাচন হতে দেবে না। উস্কানি দিয়েছে যে, নির্বাচন ঠেকাও। কিন্তু, নির্বাচনের সিডিউল হয়ে গেছে।
দুই দিনের গোপালগঞ্জ সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) নিজ নির্বাচনি এলাকা কোটালীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তারা (বিএনপি) মনে করছে, নির্বাচন হয়েই যাবে। তাই, তারা মার্চ মাসের দিকে দেশের এমন অবস্থা করবে, দুর্ভিক্ষ ঘটাবে। এটা হচ্ছে তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা। এটা শুধু দেশের নয়, বাইরের দেশেরও পরিকল্পনা আছে—যেভাবেই হোক, দুর্ভিক্ষ ঘটাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তারা কে, যে ভোটারদের অধিকার কাড়বে। ভোটারদের অধিকার কাড়ার ক্ষমতা তাদের নেই। নির্বাচনে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যারা আগুন দিতে যাবে, তাদেরকে ধরে পুলিশের সোপর্দ করতে হবে। প্রত্যন্ত এলাকায় সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। যদি আগুনসন্ত্রাসী বেশি হয়, তাহলে তাদের আগুনেই ফেলে দিতে হবে।
কোটালীপাড়াবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মা, বাবা, ভাই, বোন সবাইকে হারিয়েছি। আপনাদের ভালবাসা, আস্থা, বিশ্বাস সবচেয়ে বড় পাওয়া। যাদের নমিনেশন দিয়েছি, তারা আসন পায় একটি। আমার হলো ৩০০ আসনের দায়িত্ব। তাই, আমি বলতে পারি, আমার মতো সৌভাগ্য কারো নেই যে, এলাকা নিয়ে ভাবতে হয় না, চিন্তাও করতে হয় না, সেটা আপনারা করেন। আমি জানি না, আর কোনো প্রার্থী সৌভাগ্যবান কিনা, যতটা আমি। একটা দায় মুক্ত করে রেখেছেন। আমি স্বাধীনভাবে সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য চিন্তা করতে পারি, কাজ করতে পারি, যার সুফলটা সবাই পায়।
শেখ হাসিনা বলেন, এখনো তারা জ্বালাও-পোড়াও করছে। এদের শিক্ষাটা বোধ হয় ইসরায়েলের কাছ থেকে, যারা প্যালেস্টাইনের ওপর আক্রমণ করছে। নিজেরা ক্ষমতায় থেকে সমানে অর্থ কামিয়েছে। অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়েছে। কিন্তু, এরা মানুষকে কোনোদিন শান্তিতে থাকতে দেবে না, এটাই তাদের চরিত্র।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি শহীদ উল্লা খোন্দকার, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপিসহ কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। পরে ফিরে যান টুঙ্গিপাড়ায়। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে তার।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সড়ক পথে ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়া ও মোনাজাত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে নিজ বাসভবনে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে রাত্রীযাপন করেন তিনি।