বরিশালের দড়জায় আবার কড়া নাড়ছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

বরিশালের দড়জায় আবার কড়া নাড়তে শুরু করেছে করোনা ভাইরাসাবাহী প্রাণঘাতি ‘কোভিড-১৯’। গত তিন দিনে বরিশাল মহানগরীতে ৩ জন এবং বাবুগঞ্জ ও হিজলতে আরো একজন করে কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর ও বরিশালের সিভিল সার্জন জানিয়েছেন।

চলতি মাসের প্রাথম ১৭ দিনে দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলায় করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা এ ৫ জনই। গত মাসেও এ অঞ্চলের ৪২ উপজেলায় মোট ৩জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও তার দুজনই ছিল বরিশাল মহানগরীতে এবং ভোলাতে একজন।

ফলে সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী দক্ষিনাঞ্চলে সর্বমোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাড়াল ৫২ হাজার ৭১২ জনে। মৃত্যু হয়েছে ৬৯০ জনের। গত মার্চে এ অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২০ জন। মৃত্যু হয় দুজনের। তবে এপ্রিলে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ জনে হ্রাস পাবার সাথে কোন মৃত্যু ছিলনা।

তবে ইতোমধ্যে দক্ষিনাঞ্চলের ১ কোটি জনসংখ্যার ১২ বছরের উর্ধের প্রায় ৯০ লখ মানুষের ৭১ লাখ প্রথম ডোজ, ৬০ লক্ষাধীক দ্বিতীয় ডোজ এবং প্রায় ১২ লাখ বুষ্টার ডোজ গ্রহন করেছেন বলে জনা গেছে।

গত ফেব্রুয়ারীর পর থেকে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরুর করলে দক্ষিনাঞ্চলের আমজনতা স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনের কথা ভুলতে শুরু করেন। এখন এ অঞ্চলে একভাগ মানুষও মাস্ক ব্যাবহার করেন না। এমনকি সরকারী কোন অনুষ্ঠানেও এখন কাউকে মাস্ক পড়তে দেখা যায় না। সব ধরনের গন পরিবহনেও নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি উধাও হয়ে গেছে অনেক আগেই।

আর এ অবস্থাতেই পর পর ৩দিন বরিশাল মহানগরীতে করোনা ভাইরাসবাহী রোগী শনক্ত হল। নগরীর পাশের বাবুগঞ্জ উপজেলাতেও একই সাথে কোভিড রোগী শনাক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সকলকে সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ দেয়া হয়ছে।

তবে এ অঞ্চলে ১৭ জুন পর্যন্ত সর্বমোট ৫২ হাজার ৭১২ করোনা আক্রান্ত হলেও ইতোমধ্যে ৫১ হাজার ৭৪০ সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জনা গেছে। এ অঞ্চলে সুস্থতার হার ৯৯%-এর ওপরে। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী দক্ষিনাঞ্চলের মধ্যে সর্বাধীক করোনা আক্রান্ত জেলা বরিশাল।

মহানগরীর সুবাদে এ জেলায় ইতোমধ্যে কোভিড অক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার ২২৮ জনে উন্নীত হয়েছে। মারা গেছেন ২২৫ জন। আর এ তালিকার মধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই প্রায় সাড়ে ১২ হাজার আক্রান্ত ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েচে। দক্ষিণাঞ্চলের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬%-এর এ নগরীতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার যথাক্রমে প্রায় ২৫% ও ১৮%। দ্বিতীয় সর্বাধীক আক্রান্ত জেলা ভোলাতে ৭ হাজার ৮৬৫ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের।

তৃতীয় স্থানের পটুয়াখালী জেলায় আক্রান্ত ৭ হাজার ৪১, মৃত্যু হয়েছে ১১০ জনের। পিরোজপুরেও ৬ হাজার ৩০৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বাধীক মৃত্যু হারের বরগুনাতে ৪ হাজার ৬৬৮ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৯ জন মারা গেছেন। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝলকাঠীতে নমুনা পরিক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার সর্বাধীক, ৫ হাজার ৬০৪ জন। জেলাটিতে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ৭১ জন।