বৈশাখী রায় বয়স (১৬) বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ছোট বেলা থেকেই প্রতিনিয়ত দারিদ্রতা ও শারীরিক অসুস্থতার সাথে যুদ্ধ করে আসছে। মানসিকভাবে বড় হয়ে উঠলেও শারীরিকভাবে বেড়ে ওঠা হয়নি তার, ১৬ বছরে তার উচ্চতা এসে দাঁড়িয়েছে আড়াই থেকে তিন ফুট। উচ্চতার কাছে হার মানলেও হার মানেনি শিক্ষার কাছে, দারিদ্রতাকে নিত্যসঙ্গী করে প্রবল মনোবল নিয়ে এগিয়ে গেছে অনেক দূর।
আলহাজ্ব দলিল উদ্দিন গালস হাই স্কুল থেকে এসএসসি তে জিপিএ ৩.০৬ পেয়ে পাস করেছে ভর্তি হয়েছে এ করিম আইডিয়াল কলেজে পড়াশোনা করছে মানবিক বিভাগ নিয়ে। দুই বোনের মধ্যে ছোট বৈশাখী বড় বোন সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত আছে। মা অনিতা রানী গৃহিণী বাবা বিমল চন্দ্র রায় নিজেও শারীরিক প্রতিবন্ধী পেশায় নরসুন্দর এলাকার একটি সেলুনে নরসুন্দরের কাজ করে চারজনের সংসার তাদের। বাবা নিজে শিক্ষিত না হলেও মেয়েদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চায়। কিছুদিন পূর্বে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন আসে কম্পিউটার চেয়ে। বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসক বরিশালের তিনি খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে। বৈশাখীর শিক্ষা কার্যক্রমে বেগবান করার পাশাপাশি কম্পিউটার এর মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তাকে কম্পিউটার কিনে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
আজ ১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫ টায় জেলা প্রশাসক বরিশাল এর সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক বরিশাল এর তহবিল থেকে কিনে দেয়া কম্পিউটার ও কালার প্রিন্টা তুলে দেন জেলা প্রশাসক বরিশাল এস, এম, অজিয়র রহমান বৈশাখী ও তার মায়ের হাতে, কম্পিউটার পেয়ে মহা খুশি বৈশাখী রায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বরিশাল, মোঃ শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরিশাল, মোঃ রাজীব আহমেদ, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বরিশাল, সাব্বির আহমেদ, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার বরিশাল, মোঃ আব্দুল লতিফ, প্রফেশন অফিসার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল, সাজ্জাদ পারভেজসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমরা যদি এমন মানুষদের পাশে না দাঁড়ায় তবে কে দাড়াবে। সে হয়তো মানুষিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ কিন্তু তার ইচ্ছা শক্তি খুবি প্রখর কম্পিউটারটি তার শিক্ষাকার্যক্রমে কাজে আসবে।