বরিশালে বিলুপ্তির পথে ২০ দলীয় জোট!

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

অনলাইন ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চরম ভরাডুবির রেশ কাটতে না কাটতেই ২০ দলীয় জোটকে পাশ কাটিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ভাঙ্গনের মুখে পরেছে জোটের কর্মকান্ড। জোট বিলুপ্তির পক্ষেও ২০ দলীয় জোটের নেতারা।

২০ দল বিলুপ্তির পক্ষে বরিশালের জোট নেতাদের দাবি, বিএনপি যদি ২০ দলীয় জোটের চেয়ে ঐক্যফ্রন্টকে বেশি গুরুত্ব দেয় তাহলে উপজেলা নির্বাচনের আগেই তারা জোট ভেঙ্গে আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোটের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ৮ জানুয়ারি ২০ দলীয় জোটকে পাশ কাটিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পরই এ ভাঙ্গনের সুর দেখা দিয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরীকদল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সিনিয়র এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির কতিপয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা ২০ দলীয় জোটকে পাশ কাটিয়ে ঐক্যফ্রন্টের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। যদি বিএনপির কাছে ২০ দলীয় জোট গুরুত্বহীন মনে হয় তাহলে শুধু নামেমাত্র জোট রেখে লাভ কি? তাই জোট বিলুপ্তির ঘোষণা করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ২০ দলের আরেক নেতা বলেন, ঐক্যফ্রন্ট বিএনপিকে কি দিয়েছে। কি লাভ হয়েছে ঐক্য করে। ২০ দলীয় জোট যদি ঐক্যফ্রন্ট ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতো তাহলে ফলাফল আরও ভাল হতো।

তৃণমূল পর্যায়ের একাধিক বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে ভুল পথে পরিচালিত করে সারাদেশে মনোনয়ন বানিজ্যের মাধ্যমে প্রতিটি আসনে দুইজনকে করে মনোনয়ন দিয়ে দলের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি করে চরম ভরাডুবি উপহার দিয়েছে।
উদাহরন দিয়ে নেতাকর্মীরা আরও বলেন, বরিশাল-৪ আসনে বিএনপির জনপ্রিয় নেতা সাবেক সাংসদ মেজবা উদ্দিন ফরহাদকে মনোনয়ন বঞ্চিত করে ঐক্যফ্রন্টের এক নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাকে সাধারণ ভোটাররাতো দূরের কথা দলের নেতাকর্মীরাই চিনেন না।

একইভাবে বরিশাল-১ আসনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবাহানকে মনোনয়ন বঞ্চিত করে ১৩ বছর দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে নিজ এলাকায় ঢুকতে না পারা জহির উদ্দিন স্বপনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ফলে বিএনপির বৃহত অংশের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের মাঠে নামেননি। অনেকেই আবার দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। এভাবেই প্রায় প্রতিটি আসনে মনোনয়ন ভুলের কারণে বিএনপিকে চরম ভরাডুবির স্বীকার হতে হয়েছে।

বরিশাল বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বিএনপি এখন নেতাহীন দল মন্তব্য করে বলেন, বিগত ওয়ান ইলেভেনের সময় বিএনপিতে মাইনাস টু ফর্মূলা (বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দেয়া) বাস্তবায়নের জন্যই সংস্কারপন্থিদের আর্বিভাব হয়েছিলো। দীর্ঘদিন পরে হলেও তাদের সেই ষোলকলা আজ পূর্ণ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নামে কামাল-ফখরুল জোট যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে করে যেকোন সময় তারা শপথ নিয়ে মন্ত্রীসভায় যোগ দেবেন; এটা আমার বিশ্বাস।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনই বরিশালের সর্বত্রই নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পরলেও বিএনপিতে নেই কোন আলোচনা। বিগত উপজেলা নির্বাচনে যারা বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের এবার আর নির্বাচন করতে আগ্রহ নেই। কারণ হিসেবে অনেক নেতারাই বলেন, বিএনপি করে লাভ নেই। তারা সঠিক নেতাদের মূল্যায়ন করতে যানে না। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বরিশালের সর্বত্রই প্রার্থী সংকটে পরবে বিএনপি।