বরিশালে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে লিসা টাওয়ার খ্যাত ঐতিহাসিক মাহিলাড়া মঠ

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

শামীম আহমেদ: ইতালির লিসা টাওয়ার ন্যায় নির্মিত শিখর মন্দির শিল্পের অপূর্ব নিদর্শন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ঐতিহাসিক মাহিলাড়া সরকার মঠ পর্যটকদের আকৃষ্ট করে তুলছে।

প্রতিদিনই দুরদুরান্ত থেকে পর্যটকরা দেখতে আসছেন প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃতি পাওয়া প্রাচীন নির্মান শিল্পের এ নিদর্শনটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্গাকারে নির্মিত মঠের ভিতরে একটি কক্ষ এবং পশ্চিমের দেয়ালে একটি খিলান যুক্ত প্রবেশ পথসহ নানান ধরনের অলংকরণ রয়েছে।

এছাড়াও মঠের ভিতরের কক্ষের দেয়ালে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশের খুটি রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে বাঁশের খুটিখানা মঠ নির্মানের সময় ব্যবহৃত হয়েছিলো।

মঠে কোন খোদিত শিলালিপি পাওয়া না গেলেও মঠের সামনে টানানো একটি ফলকে দেখা গেছে, নবাব আলীবর্দি খানের ১৭৪০-১৭৫৬ সনের শাসনামলে সরকার রুপরাম দাস গুপ্ত নামক এক ব্যক্তি মঠটি নির্মান করেন।

যার উচ্চতা ভূমি হতে প্রায় ২৭.৪০ মিটার। ইতালির লিসা টাওয়ার ন্যায় নির্মিত মঠটি ক্রমশ সরু হয়ে উপরের দিকে ধনুকের ন্যায় কার্ণিসের অলঙ্করণে শোভিত হয়ে শিখরে গিয়ে শেষ হয়েছে।

মঠ দেখতে আসা কলেজ ছাত্রী রিতু দাস দিয়া জানান, মানুষের মুখে মঠের সৌন্দর্যের বিষয়ে জানতে পেরে বান্ধবীদের নিয়ে মঠটি দেখতে এসেছি। প্রাচীন শিল্পের মঠটি দেখে আমরা খুবই অবিভুত।

তিনি আরও জানান, এখানে এসে স্থাানীয় লোক মুখে জন শ্রুতি রয়েছে ঐতিহাাসিক এ স্থানে মঠ প্রতিষ্ঠাতার মায়ের সমাধি স্থল।

প্রতিষ্ঠাতা এই মঠ স্থাপন করে দম্ভের সহিত বলেছিলেন মা, তোমার সব ঋণ শোধ করে দিলাম। এ কথা বলার সাথে সাথে মঠ বেকে যায়। এতে সকলে ভয় পেয়ে যায়। সেই থেকে মঠটি এখনো বেকে রয়েছে।

মাহিলাড়া ঐতিহাসিক মঠ সংলগ্ন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার দাস জানান, দেশ-বিদেশের পর্যটকরা মঠটি দেখতে এসে খুবই খুশি হয়।

কিন্ত এখানে কোন বসার বা বিশ্রাম নেয়ার স্থান না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরে যায়। তিনি আরও জানান, মঠটি কয়ের বছরপূর্বে সংস্কার করা হয়েছে। বর্তমানে মঠের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তরা খসে পরেছে।

এছাড়াও মঠটির দক্ষিণ পাশের দিঘীর পাড়ে পাইলিং না থাকায় মঠটি অত্যন্ত ঝূঁকিপূর্ন হয়ে পরেছে। তিনি মঠটি সংস্কার, মঠের স্থানে বিশ্রামাগার ও দীঘিতে একটি ঘাটলা নির্মানের দাবী জানান।

গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ইতিমধ্যে মঠটি পরিদর্শন করা হয়েছে।

পাশাপাশি ঐতিহাসিক এ মঠটির সমস্যা সমাধানে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। এবিষয়ে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।