শামীম আহমেদ ॥ বরিশালে এক ইলেক্ট্রিশিয়ানকে মারধর করে মুখমন্ডল ফাঁটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
পরকীয়া প্রেমিকার বাসায় কলিং বেল লাগাতে দেরী হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি হুমায়ুন সিকদার ওই বাসায় গিয়ে কলাপসিবল গেট আটকে ইলেক্ট্রিশিয়ান মিলনকে বেদম মারধর করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এতে তার কপাল ফেঁটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। মিলনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে এ ঘটনা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে জানানোর অপরাধে মঙ্গলবার সকালে ফের দুই দফায় মিলনকে দেখে নেওয়ার হুমকী দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড সভাপতি হুমায়ুন ও তার পরকীয়া প্রেমিকা চায়না বেগমের বিরুদ্ধে। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন তিনি।
মিলন জানান, তিনি ১৩ নম্বর ওয়ার্ড খান সড়কের ডিস ব্যবসায়ী আসলাম খানের ডিস লাইনের কাজ করেন। মাঝে মধ্যে বাইরে ইলেক্ট্রিকের কাজ করেন।
গত সোমবার সকালে খান সড়কের চায়না বেগম তার বাসায় কলিং বেল লাগিয়ে দিতে বলেন। দিনভর ডিস লাইনের কাজে ব্যস্থ থাকায় বিকেলে ওই বাসায় কলিং বেল লাগাতে যান তিনি। এ সময় দেরী হওয়ায় চায়না বেগম অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তাকে।
এর প্রতিবাদ করলে চায়না তাকে জুতা দিয়ে মারধর করে এবং মুঠোফোনে তার পরকীয়া প্রেমিক হুমায়ুনকে খবর দেয়। কিছুক্ষনের মধ্যে হুমায়ুন ওই বাসায় গিয়ে কলাপসিবল গেট আটকে মিলনকে এলোপাথারী কিল-ঘুষি দিয়ে তার কপাল ফাঁটিয়ে দেয় এবং মুখমন্ডল সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে।
ওই রাতেই বিষয়টি মহানগর আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারন সম্পাদক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ’র ব্যক্তিগত সহকারী মোস্তফা জামান এবং আজ মঙ্গলবার সকালে সিটি মেয়রের নিকটস্থ হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা নিরব হোসেন টুটুলকে জানান। টুটুল এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয় হুমায়ুন ও চায়না বেগম।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিলনকে আবার রাস্তায় একা পেয়ে তার উপর চড়াও হয় চায়না। স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান এবং আব্দুল কুদ্দুসের উপস্থিতিতে চায়না কারো কাছে নালিশ তার কিছুই করতে পারবে না বলে হুমকী দেয়।
এর কিছুক্ষন পর ওই সড়কের কাজী স্টোর্সের সামনে মিলনকে আবার একা পেয়ে নেতাদের কাছে নালিশ করার অভিযোগে তাকে দেখে নেয়ার হুমকী দেয়। এ সময় ওয়ার্ড নেতা হুমায়ুন আঙ্গুল উচিয়ে প্রকাশ্য হুমকী দিয়ে বলেন, ‘আমি হুমায়ুন কাউরে ধরলে কিন্তু ছাড়ি না’।
এরপর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন ইলেক্ট্রিশিয়ান মিলন।
এদিকে মারধর এবং দফায় দফায় হুমকী দেয়ার পর দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে মিলন আবারও হেনেস্থা করার চেস্টা করে হুমায়ুন। পরে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে তাৎক্ষনিক বেঁচে যায় দিনমজুর মিলন।
ইলেক্ট্রিশিয়ান মিলনকে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন ওসি মো. নুরুল ইসলাম।