সোহেল আহমেদ। নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষনার পর পরই নরেচড়ে বসেছেন বরিশাল- মহানগরের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী সমার্থকরা। কোন আইনি জটিলতা না থাকলে চলতি বছরের ৩০ জলাই অনুষ্টিত হচ্ছে বহুল প্রত্যাশীত বরিশাল সিটিকর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচন কে সামনে রেখে এরই মধ্যে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর বরিশাল নগরী। রমজানেরর ইফতার পার্টি ও আগাম ঈদ শুভেচ্ছা বিনীময়ে কৌশলে ব্যপকভাবে প্রচারনা যুদ্ধে নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরছেন প্রার্থীরা।
বিগত নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী সমার্থকদের মধ্যে উৎসবে ভিন্নতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সরকারদলের এবং সংসদের প্রধান বিরোধি দলের মধ্যে দুই সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীই তরুন নতুন মুখ। এবারই তারা প্রথম কোনো ভোট যুদ্ধে অবর্তীন হচ্ছেন। সংসদের বাহিরে থাকা বিরোধি দল বিএনপির একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকলেও দুই তরুনের প্রচারনায় আড়ালে পড়ছে তাদের প্রচার প্রচারনা। অবশ্য সব কিছু পরিস্কার হতে ভোটারদের আরো কিছু দিন অপেক্ষায় থাকতে হবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
সুত্রমতে,তফসিল ঘোষনার আগ থেকেই সক্রিয় ভাবে কর্মীসমার্থক গোছাতে সামার্থ হয়েছেন মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ। দলের তরুন যুবসমাজ সাদিক আবদুল্লাহকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে দাবী করে আসছে। সাদিক ইতিমধ্যে যুবরত্ন খ্যাতি লাভ করেছেন। ব্যনার ফেষ্ঠুনসহ সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছে কর্মীরা। সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুর পর থেকই সাদিক আবদুল্লাহ নগরের সবচেয়ে পরিচিত মুখ। তিনি নৌকা প্রতিকের পক্ষে ভোট চেয়ে নগরকে চষে বেড়াচ্ছেন। কেন্দ্র থেকে সবুজ সংকেত সাদিকের দিকেই এমন একটি গুঞ্জনও সোনা যাচ্ছে। স্থানিয় সভাপতি সম্পদকসহ নেতাকর্মীরা সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে প্রচারনায় ব্যাস্ত এমন বাস্তবতায় পিছিয়ে নেই দলের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী কর্নেল (অব:)জাহিদ ফারুক শামিমও। প্রচার প্রচারনায় তিনিও বেশ সক্রিয় রয়েছেন দির্ঘদিন যাবত। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে রিতিমত ঘাম ঝড়াচ্ছেন দলের ত্যাগী নেতা হিসেবে খ্যাত জাহিদ ফারুক শামিম। দলের দুর্দিনে ভদ্র ইমেজের অধিকারী জাহিদ ফারুক শামিমের দারুণ ভুমিকা রয়েছে বলে মনেকরছে একটি অংশ। একটি সুত্র বলছে দলের উচ্চপর্যায় থেকে এখনও কাউকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে মনোনয়ন ব্যাপারে ঘোষনা আসেনি।
সিটি নির্বাচনের এবারের আর এক নতুন ট্রামকার্ড শিল্পপতি ইকবাল হোসেন তাপস। বেকার,গরীব সুভিধা বঞ্চিত মানুষের বন্ধু হিসেবে ব্যপক পরিচিতি লাভ করেছেন ইকবাল হোসেন তাপস। বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধি দল জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন তাপস দলের একমাত্র মনোনীত মেয়র পদ প্রার্থী। বরিশাল মহানগরীকে আধুনিকায়ন করা,পরিচ্ছন্ন রাজনিতীতে সাধারন মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার স্লোগান নিয়ে ইকবাল হোসেন তাপস প্রচার প্রচারনায় বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করলেও মুলত তিনি দলমত নির্বীশেষে নগরের সর্বোসাধারনের সমার্থন আদায়ের চেস্টা করছেন। বেকার যুবসমাজের একটি বিরাট অংশ তাপসেরর প্রতি আকৃষ্ট বলে জানা গেছে। শহরকে নিয়ে নিজের কর্মপরিকল্পনা জনসাধারনের নিকট তুলে ধরছেন। ভোটারদের সাথে মতবিনিময় ও সোস্যাল মিডিয়ায়ও প্রচারনায় রয়েছেন তাপস। তিনি বরিশাল রাজনিতীতে নতুন মুখ হলেও ব্যবসায়, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্টানে বিগত দিনে অনেক লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করে দেয়ার সুবাধে বড় দুই দলের মধ্য তিনি এখন শক্ত প্রার্থী হয়ে হয়ে দাড়িয়েছেন। জাপার কেন্দ্রীয় সুত্র বলছে এবার তারা ক্লিন ইমেজ সম্পন্ন প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছেন। ভোট যুদ্ধে তাপসই হবে তিন দলের অন্যতম ট্রামকার্ড।
এদিকে সরকারিদল ও সংসদের প্রধান বিরোধি দলের দুই তরুন নতুন মুখ যখন গোটা বরিশালকে প্রচারনা যুদ্ধে অবর্তীন হচ্ছে এমন প্রেক্ষাপটে সাধামাটা প্রচারনা চালিয়ে মাঠে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। সুত্র বলছে খুলনার সিটিকর্পোরেশন নির্বাচনের পরিবেশের জন্য কেন্দ্রী কমিটি মনোনয়ন বিষয়ে কৌশলী ভুমিকা পালন করছে। একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে থাকলেও দলের একজন নারী নেত্রীকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে । একমসয়ের বৃহৎ এই দলটির নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের চেয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে দৈন্যদশায় রয়েছেন। তবে যথাসময় যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেয়া হবে এমনটি জানিয়ে অপর একটি অসমার্থিত সুত্র বলছে,ভোট যুদ্ধে বরিশাল বিএনপিতে দলের যুগ্ন-মহাচিব এ্যড.মুজিবুর রহমান সরোয়ারের বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে সকলে একত্রিত হয়ে সরোয়ারের পক্ষেই অবস্থান নিতে পারেন বলে সুত্রটি দাবী করছে।
সিটি নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে এখন সবখানে তরুনদের জয়জয়কার। সেদিক বিবেচনায় এনে দলগুলোর উচিত তরুনদের সুযোগ করে দেয়া। ভিন্নমত পোষন করে অপর একজন বিশ্লেষক খুলনা সিটি নির্বাচনের উদাহরণ টেনে বলেন পুরান চাল ভাতে বলে। তাই দলের ত্যাগী নেতাদের বিষয়ে দলগুলো চিন্তাভাবনা করতে পারে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো যাদেরকেই মনোনয়ন দেয় না কেনো,শান্তিপুর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ সৃস্টির প্রতি সবাই একমত পোষন করে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানান।