 
                                            
                                                                                            
                                        
ক্রমশ বাড়ছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উত্তাপ। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বইছে নির্বাচনী হাওয়া । নগরবাসী, ভোটার, দলীয় নেতাকর্মী-সবার মুখে নির্বাচনী আলাপ।
বিশেষ করে কোন দল থেকে মেয়র পদে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন এই নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। সরকারের শেষ সময়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণে মরিয়া আওয়ামী লীগ। পিছিয়ে নেই বিএনপিও। তারাও জয় নিশ্চিত করতে চায়। তাই জনপ্রিয় ও যোগ্য প্রার্থীর সন্ধান করছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাইকমান্ড।
এদিকে তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়ন নিশ্চিত করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন দুই দলের সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মনোনয়ন পেতে একাধিক প্রার্থী মাঠে আছেন। মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী সংখ্যা কিছুটা কম হলেও কাউন্সিলর পদে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। প্রতিটি ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। দলীয় সমর্থন পেতে চালাচ্ছেন লবিং তদবির।
স্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি অনেকে কেন্দ্রেও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। খুলনার মতো এ বরিশাল সিটিতেও একক কাউন্সিলর প্রার্থী দিতে হিমশিম খেতে হবে দুই দলের নীতিনির্ধারকদের। দল সমর্থন না দিলেও অনেকে নির্বাচন করতে অনড়। প্রয়োজনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে চিন্তিত দুই দলের নীতিনির্ধারকরা।
মেয়র পদ নিয়ে রাজশাহী ও সিলেটে অনানুষ্ঠানিক ঘোষণার কথা শোনা গেলেও বরিশালের প্রার্থিতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে আওয়ামী লীগ। এখানে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে জয় নিশ্চিত করার মতো প্রার্থীর অভাব দেখছে দলটি। আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর বড় ছেলে সেরনিবাত সাদিক আবদুল্লাহর মেয়র পদে মনোনয়নের বিষয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে আছে।
তবে জয় নিশ্চিতের জন্য নানা কৌশলের অংশ হিসেবে তা এখনই দৃশ্যমান করা হচ্ছে না। বরিশালে আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম ও আ.লীগ নেতা খান মামুন জোর লবিং করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান মঙ্গলবার বলেন, জয় ছিনিয়ে আনতে পারবে এমন প্রার্থীর সন্ধান করছি। জনপ্রিয় একাধিক প্রার্থীর মধ্য থেকেই একজনকে চূড়ান্ত করা হবে। সামনে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভা আছে। সেখানে নাম প্রকাশ করা হবে।
এদিকে বরিশালে বিএনপির ছয়জন প্রার্থী মনোনয়ন দৌড়ে আছেন। তারা মনোনয়ন পেতে নানা মাধ্যমে চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরা হলেন, বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামাল, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ওবায়দুল হক চাঁন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহীন, মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন শিকদার ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা আফরোজা খানম নাসরিন।
তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, খুলনার মতো বরিশালেও মনোনয়নে চমক থাকতে পারে। প্রকাশ্যে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেও সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান সরোয়ারের হাতে ধানের শীষ তুলে দিতে পারে দলটির হাইকমান্ড। দলের নীতিনির্ধারকের সিদ্ধান্ত মেনে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব সরোয়ারই হতে পারেন বরিশালের বিএনপির মেয়র প্রার্থী।
জানতে চাইলে মজিবুর রহমান সরোয়ার বলেন, আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে চাই। তারপরও দলের হাইকমান্ড যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।
জানা গেছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন ৩০টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে দুই দলের একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছে। ৭ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে নিগার সুলতানা হনুফা, এ্যাড. রফিকুল ইসলাম খোকন, আব্দুল খালেক কায়সার বিশ্বাস- বিএনপি থেকে সৈয়দ আকবর হোসেন মাঠে রয়েছেন। ২০নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে- এসএম জাকির হোসেন, জিয়াউর রহমান বিপ্লব ও বিএনপি থেকে মো. বাতেন (ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক), ৮নং ওয়ার্ডে বিএনপি থেকে সেলিম হাওলাদার, মো. আল আমিন- আওয়ামী লীগ থেকে শেখ মনি, বশির আহম্মেদ মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ১৯নং ওয়ার্ডে গাজী নইমুল হোসেন লিটু, মো. সুনহাম-বিএনপি থেকে জাহিদ হোসেন, কাজী বশির ও মোস্তাফিজুর রহমান বাবু আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ২১নং ওয়ার্ডে বিএনপি থেকে আলতাফ মাহামুদ সিকদার, খন্দকার আবুল হাসান লিমন- আওয়ামী লীগ থেকে শেখ সাঈয়েদ আহম্মেদ মান্না, এসএম সুজন মাঠে আছেন।