প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে অন্য জেলার লোক বরিশাল জেলায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছ। সেই সাথে বরিশাল জেলার লোকজনকে জেলার বাইরে না যেতে দির্নেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ জারি করা হয়েছে। তবে এর আগেই সকালে মৌখিবভাবে এ সংক্রান্ত ঘোষণা দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক।
দুপুরে ঘোষণা করা গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট মহামারীর বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব ও সঙ্গনিরোধ নিশ্চিৎ করার লক্ষ্যে বরিশাল জেলায় অবস্থানরত ব্যক্তিবর্গ ও যানবাহনের বরিশাল জেলার বাহিরে গমণ ও বাহির হতে বরিশালে গমনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
তবে ওষুধ, খাদ্রদ্রব্য, কৃষিপণ্য, আমদানী, রপ্তানী কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহন এ আদেশের আওতামুক্ত থাকবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে বলে ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান জানিয়েছেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আক্রান্ত সহ মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বরিশালে করোনা বিস্তার রোধে ওই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এর আগেই বরিশাল জেলায় অন্য জেলার মানুষের প্রবেশ ঠেকাতে সকল ধরনের খেয়াঘাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যা এখানো বন্ধ রয়েছে।
তাছাড়া সদ্য ঘোষিত গণবিজ্ঞপ্তি অর্থাৎ জেলায় অন্য জেলার লোক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিতে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব এবং পুলিশসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থার কাছে। জেলার প্রবেশদ্বারে পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চেক পোষ্ট বসিয়ে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
এর আগে করোনা ভাইরাস থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীও একই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তাছাড়া মঙ্গলবার সকাল থেকে পটুয়াখালী শহরের প্রবশেদারগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি শহরে প্রবেশ মুখে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি। শহরে অভ্যান্তরে বিনা প্রয়োজনে ঘোরা ফেরার বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে পটুয়াখালী চৌরাস্তা থেকে শহরের প্রবেশের সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। একেবারে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঢুকতে কিংবা শহর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না।
এ ছাড়া শহরের ২ নম্বর বাঁধঘাট এলাকাতেও শহরের প্রবেশ পথ বন্ধ করা হবে। শহরের অভ্যন্তরে অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলো সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বিনা প্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করছে এমন কাউকে পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট আক্রান্ত ১৬৪ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। আর নতুন করে সনাক্ত হয়েছে ৪১ জন।