বরগুনার আমতলী পৌর শহরের সরকারী একে হাই স্কুল সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় গত ৫ দিন পূর্বে রাতে আপন চাচাতো ভাই কর্তৃক শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী ৬ বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা। পুলিশ মামলার আসামী মোঃ সানাউল্লাহ (১৯) কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সানাউল্লাহ ভিকটিমের আপন চাচাতো ভাই। চাচার ব্যবসার সুবাদে আমতলী পৌর শহরের আমতলী বন্দর হোসাইনিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসায় আলিম ২য় বর্ষে লেখাপড়া করেন। রাতে মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে থাকলেও খাওয়া-দাওয়া করে চাচার বাসায়। ঘটনার দিন গত ১৩ জুলাই রাত অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে সানাউল্লাহ ভিকটিমের বাসায় রাতের খাবার খেতে যায়।
এ সময় হঠাৎ বৃষ্টি নামলে ভিকটিমের মা সানাউল্লাকে বাসার উপড়ে (দোতলা) গিয়ে জানালা দিয়ে আসতে বলে। এ সময় সানাউল্লাহ জানালা দিতে উপরে গিয়ে ছোট বোন শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে মুখ চেপে ধর্ষণ করে। শিশুর কান্নার শব্দ পেয়ে মা উপরে (দোতলা) উঠে গিয়ে দেখে দু’জনই উলঙ্গ অবস্থায় বিছানায়। সানাউল্লাহ ভিকটিমের মাকে দেখে উপড় (দোতলা) থেকে তাড়াহুড়ো করে নিচে নেমে ছাত্রাবাসে চলে যায়। মেয়েকে কাঁদতে দেখে তাৎক্ষনিক তার কাছ থেকে ধর্ষণের বিষয়টি শুনে মা ভিকটিমের বাবা ও তার চাচাকে জানায়।
মেয়ের বাবা ও চাচা বিচার করবে বলে ভিকটিমের মাকে শান্ত থাকার কথা বলে। কিন্তু সানাউল্লাহর কোন বিচার না করায় গত ১৪ তারিখ বিকেলে ভিকটিম শিশুটিকে নিয়ে আমতলীর বে-সরকারী সময় মেডিকেয়ার এন্ড হসপিস এর চিকিৎসক ডাঃ মোনায়েন সাদ’কে দেখান। পরের দিন ১৫ জুলাই ভিকটিমকে বরিশাল শেরে-এ-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার ৫দিন পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে ভাসুরের ছেলে সানাউল্লাহকে আসামী করে আমতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। বিকেলে পুলিশ সানাউল্লাহকে গ্রেফতার করে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করেন। আদালতে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সানাউল্লাহ বলেন, আমি আমার এত ছোট বোনকে ধর্ষণ করিনি। চাচী যখন আমাকে জানালা দিতে উপড়ে (দোতলা) পাঠায়। তখন চাচা-চাচী দু’জনেই বাসায় ছিল। আমার ছোট বোন তখন খেলতে ছিল। এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। আমার বাবা মারা যাওয়ার পরে আমার ছোট চাচা আমাদের সংসারের যাবতীয় খরচ বহন করেন। যা চাচী ভাল চোঁখে দেখেন না। এ কারনে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে চাচী আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
ভিকটিম শিশুটির মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার এতটুকু শিশু কন্যাকে আমার ভাসুরের ছেলে সানাউল্লাহ মুখ চেপে ধর্ষণ করেছে। যা আমার মেয়ে আমাকে বলেছে। মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে উপরে (দোতলা) উঠে দেখি বিছানায় আমার মেয়ে উলঙ্গ ও সানাউল্লাহর শরীরের জামা-কাপড়ও খোলা। ঘটনা ঘটার সাথে সাথে বিষয়টি আমার স্বামী ও মেঝ ভাসুরকে জানানো হলেও তারা বিচার করার কথা বলে কোন বিচার না করায় ৫দিন পরে আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি মেয়েকে উন্নত চিকিৎসার করানোর জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে এনে ভর্তি করেছি। এখানে ওর ডাক্তারী পরীক্ষা হবে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, প্রাথমিকভাবে শিশু ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য শের-এ-বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারী পরীক্ষা হাতে পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। মামলার আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।