বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় বামনা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোর্শেদ শাহারিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন জনির তোলা সেলফি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে তিনটি ছবি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে ছাত্রলীগ নেতা মোর্শেদ শাহারিয়া লেখেন, ‘নৌকার নির্বাচন করতে গিয়ে কারাবরণ করতে হলো আমাদের’।
ছবিতে দেখা যায়, সেলফিটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় দাঁড়িয়ে তোলা। এটি তুলেছেন বামনা ছাত্রলীগ সভাপতি মোর্শেদ শাহারিয়া। তার সঙ্গে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক জনি। বাকি দুটি ছবির একটি হাজতখানার মধ্য থেকে তোলা। আরেকটি ছবি এজলাসের কাঠগড়ায়।
এই দুই ছাত্রলীগ নেতার এজলাস ও আদালতের হাজতখানায় তোলা ওই ছবি তাদের সমর্থকরা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। হাজতখানায় সেলফি তোলা ও ফেসবুকে পোস্ট নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে কোর্ট ইন্সপেক্টর মারুফ আহমেদ বলেন, ‘আদালতের বাইরে থেকে তার সমর্থকরা গোপনে ছবি তুলে নিয়ে যেতে পারেন। তবে, হাজতখানার ভেতরে মোবাইল নিয়ে সেলফি তোলার কোনো সুযোগ নেই।’
এসময় আদালতের হাজতখানার মধ্যে তোলা সেলফি তাকে দেখানো হলে তিনি বলেন, ‘হাজতখানার দায়িত্বে যেসব পুলিশ সদস্য ছিলেন তাদের গাফিলতি থাকতে পারে। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার বাদী তারিকুজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আদালতের এজলাস থেকে শুরু করে হাজতখানার মধ্যেও তারা মোবাইল নিয়ে সেলফি তুলেছেন। ফেসবুকে আবার সেসব ছবি পোস্ট করেছেন। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ভুবন চন্দ্র দাস বলেন, ‘আদালতের ভেতরে ছবি তোলা বা ভিডিও করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কোড অব কন্ডাক্ট ইন দ্য কোর্টের ১৩ নম্বর ক্রমিকে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, আদালতের ভেতরে ছবি তোলা, ভিডিও করা যাবে না। সেক্ষেত্রে এ কাজ যারা করবেন, তারা আদালত অবমাননার দায়ে দণ্ডনীয় অপরাধ করবেন।’
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ মার্চ বামনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় বামনা উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারিকুরুজ্জামান সোহাগ বাদী হয়ে বরগুনা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ মামলা করেন।
মামলায় বামনা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোর্শেদ শাহরিয়া গোলদার ও সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন জনিসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়।
বুধবার বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মজুমদারের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন ১৩ আসামি। বিচারক ১১ আসামির জামিন মঞ্জুর ও অপর দুই আসামির (বামনা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।