প্রেম করে বিয়ের দাবিতে ঢাকার উত্তরা থেকে বরগুনায় প্রেমিকের বাড়িতে আসা জামালপুরের শিখা আক্তার মৌ’র জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদ হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
ওই তরুণীর আইনজীবী এম. মজিবুল হক কিসলু বলেন, সোমবার সকালে ওই আদালতে তরুণীর পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়েছিল। আদালত জামিন শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছিলেন। তার উপস্থিতিতেই জামিন শুনানি হয়েছে।
কিসলু বলেন, ওই তরুণীর বিরুদ্ধে মাহমুদুল হাসানের বাবা মোশাররফ হোসেন যেসব ধারায় ১২ মে মামলা করেছেন সব ধারা জামিনযোগ্য। যার কারণে আদালত কোনো শর্ত ছাড়াই জামিন দিয়েছেন। মৌ আজই ঢাকা চলে যাবেন। আদালত বাদী মোশাররফ হোসেন, আসামি শিখা আক্তার মৌ, বাদী পক্ষের আইনজীবী ও আসামী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনেছেন। আদালত আসামিকে কোন ধরনের ঝামেলা করতে নিষেধ করেছেন। শিখা আক্তার মৌ যদি মনে করেন তবে আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন।
ওই তরুণীর ভাই শিপন মন্ডল যুগান্তরকে বলেন, মাহমুদুল হাসান সব কিছু জেনে আমার বোনের সঙ্গে প্রেম করেছেন। আমার বোনকে বিয়ে করার আশ্বাস দেয়। আমার বোন বিবাহিত তাও মাহমুদুল হাসান জানত। সব কিছু জেনে মাহমুদুল হাসান আমার বোনকে দিয়ে গত বছর ২২ অক্টোবর তার স্বামীকে তালাক দেওয়ায়।
মাহমুদুল হাসানের আশ্বাসে আমার বোন তাদের বাড়িতে ২৯ এপ্রিল এসেছে। একদিন ছেলের বাসায় ছিল। এখন মাহমুদুল হাসান আমার বোনকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। আমরাও আইনি লড়াই করব। আইন তো সবার জন্য। আমাদের অসম্মান করবে। আমরা নীরবে ছেড়ে দেব না।
উল্লেখ্য গত ২৯ এপ্রিল জামালপুরের তরুণী ঢাকার উত্তরা থেকে বরগুনার বেতাগী উপজেলার চান্দখালী বাজার সংলগ্ন ব্যাংক কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে আসেন। এ সময় ওই তরুণী দাবি করেন মোশাররফ হোসেনের ছেলে রাজধানীর উত্তরায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা করেন।
এ সময় মো. মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলার পর মাহমুদুল হাসান গা-ঢাকা দেয়। এরপর ওই তরুণী চান্দখালী মাহমুদুল হাসানের গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। ওই তরুণী তার প্রেমিক মাহমুদুল হাসানের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন।
এ সময় মাহমুদুল হাসানের পরিবারের কাউকে বাড়িতে না পেয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেন ওই তরুণী। একপর্যায়ে প্রেমিক হাসানের মামাকে জিম্মি করে স্থানীয়দের সহায়তায় বাসার তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে জামালপুরের ওই তরুণী। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় মাহমুদুল হাসানের বাবা বৃহস্পতিবার আদালতে ওই তরুণীকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় শুক্রবার ১২ মে ভোরে ওই তরুণীকে আটক করে বেতাগী থানার পুলিশ। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।