কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি না নিয়ে হাসপাতালের দায়িত্ব পালন না করে কর্মস্থল ত্যাগ করে সহকর্মী চিকিৎসকের বিয়েতে যাওয়ায় অভিযোগে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। শনিবার তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শংকর প্রসাদ অধিকারী তাদের এ শোকজ করেন।
তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের শোকজের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আট জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। ২০১৯ সালে ডিসেম্বরে ওই পদে ডাঃ ফায়জুর রহমান, ডাঃ লায়লা লাভিন, ডাঃ সাইদি হাসান, ডাঃ দিলিপ রায় ও ডাঃ সুমন বিশ^াস যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তাদের বিরুদ্ধে হাসপাতালে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ রয়েছে। পাঁচ চিকিৎসকের মধ্যে দিলিপ রায় ও সুমন বিশ^াস সারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে গত ছয় দিনের ছুটিতে আছেন। বাকী তিন জনের হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করার কথা।
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সুমন খন্দকারের বরিশালে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। ছুটি না নিয়ে হাসপাতাল খালি রেখে ওই তিন চিকিৎসক ফাইজুর রহমান, লাভলি লাভিন ও সাইদি হাসান সহকর্মীর বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। এতে গত বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালে জরুরী বিভাগ ও বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। দুই বিভাগে কোন চিকিৎসক ছিল না। শতাধিক রোগী এসে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে গেছেন। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ ঘটনায় শনিবার তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী ছুটি না নিয়ে হাসপাতালের দায়িত্ব পালন না করে কর্মস্থল ত্যাগ করে সহকর্মীর বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদানের অভিযোগে তিন চিকিৎসক ফাইজুর রহমান, লাভলী লাভিন, সাইদি হাসানকে শোকজ করেন। তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই তিন চিকিৎসককে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার তালতলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে কোন চিকিৎসক না পেয়ে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে এসেছি। তারা আরো বলেন, অনেক রোগী চিকিৎসক না পেয়ে ফিরে গেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে কর্তব্যরত কয়েকজন স্টাফ বলেন, গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের পাঁচজন চিকিৎসকের কেউ হাসপাতালে ছিল না। এতে জরুরী বিভাগ ও বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। তারা আরো বলেন, দুই চিকিৎসক পূজার ছুটিতে ছিলেন অপর তিন চিকিৎসকের কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই।
তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোঃ ফাইজুর রহমান বলেন, ওইদিন দুুপুর দুইটা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে বিয়েতে গিয়েছি। তিনি আরো বলেন, শোকজের কাগজ পাইনি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ বলেন কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি না গিয়ে হাসপাতালের দায়িত্ব পালন না করায় তিন চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ হুমায়ূন শাহিন খাঁন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।