বরগুনায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এক উপসহকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী উপসহকারী পুলিশ কর্মকর্তা ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন।
বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান খান বৃহস্পতিবার মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পটুয়াখালীকে ৭ দিনের মধ্য অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামি হলেন বরিশাল কোতোয়ালি থানার বামনকাঠি গ্রামের রায়হান তালুকদার। তিনি বর্তমানে বরগুনা জেলার তালতলী থানায় উপসহকারী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। বাদী ও আসামি এক সময় বরগুনা গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন।
অভিযোগে জানা যায়, বরগুনা জেলার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের গোয়েন্দা শাখায় একই সময় বাদী ও আসামি কর্মরত ছিলেন। বাদীর স্বামী ভোলার সিআইডিতে কনস্টেবল পদে চাকরি অবস্থায় ২০২১ সালের ১২ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। স্বামী না থাকার সুযোগে একই স্থানে একই পদে চাকরি করার সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। আসামি বাদীর দুই সন্তানসহ তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এরই মধ্যে গত বছর ২৮ মে বাদী ভোলায় একটি মামলার সাক্ষ্য দিতে বরগুনা থেকে রওনা দিয়ে বরিশাল যান। আসামি রায়হান তালুকদার বাদীর পিছু নেন। বরিশালে একটি আবাসিক হোটেলের সামনে ফাস্ট ফুডের দোকানে বাদীকে বসিয়ে কোল্ড ড্রিংক্স খেতে দেন আসামি। এরপর বাদী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। বিকাল ৪টার দিকে বাদীর জ্ঞান ফিরলে বরিশালের একটি আবাসিক হোটেলে নিজেকে বিবস্ত্র অবস্থায় আসামি রায়হানকে জড়িয়ে ধরা দেখতে পান।
আসামিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বাদীকে বলেন, তোমার বিবস্ত্র ছবি তুলে রেখেছি। আমি যা বলব তা তোমার শুনতে হবে। ওই হোটেল কক্ষে আসামি বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাদীকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে আসামি বাদীর বিবস্ত্র ছবি তার দখলে রেখে বিভিন্ন সময় ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৭ লাখ টাকা নেয়।
বাদী বলেন, আসামি রায়হান আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় ৭ লাখ টাকা নিয়েছে। তারপরও রায়হান বিভিন্ন সময় ওই সব ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। সর্বশেষ রায়হান গত বছর ২৪ অক্টোবর রাত ১১টায় বরগুনা চরকলোনীতে আমার বাসায় গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। আমি রেজিস্ট্রি বিয়ে করতে বললে রায়হান অস্বীকার করে চলে যায়। তারপরও আমি রায়হানের সঙ্গে বহুবার কথা বলে বিয়ে করতে বলেছি। রায়হান রাজি হয়নি। এ বিষয়ে বরগুনা থানায় ৭ ফেব্রুয়ারি রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি।
এ বিষয়ে রায়হান তালুকদার বলেন, বাদীর মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাদী আমার চেয়ে বয়স ও সার্ভিসে সিনিয়র। আমি তার কাজে সহায়তা করতাম। আমার স্ত্রী ও সন্তান আছে। আমার সঙ্গে বিয়ে বসতে চেয়েছে বাদী। আমি বিয়ে করতে রাজি হইনি। এ কারণে আমার মানসম্মান নষ্ট করতে মামলা করেছে।
বরগুনা থানার ওসি আলী আহম্মদ বলেন, বাদী বরগুনা থানায় মামলা করতে আসেননি। কেউ মামলা করতে আসলে মামলা নিতাম।