সিলেটের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বানভাসি মানুষজন পড়েছেন অবর্ণনীয় দুর্ভোগে। গভীর রাত পর্যন্ত উদ্ধারের আকুতি জানাচ্ছেন গ্রামে গ্রামে আটকা পড়াদের স্বজনেরা। বিভিন্ন স্থানে বানের পানিতে ভেসে গেছেন বেশ কয়েকজন।
জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখালে বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছে চালক, হেলপার ও ট্রাক। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তেলিখাল এলাকার ভোলাগঞ্জ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মধ্যরাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাদের সন্ধান মেলেনি।
অন্যদিকে সিলেট সদরে বানের পানিতে ভেসে গেছেন আরেক যুবক। নিখোঁজ রয়েছেন একজন ব্যাংক কর্মকর্তাও।
ট্রাকের মালিক শাহ খালেদ আহমদ জানান, তার (ঢাকা মেট্রো-ট ২০-৩১৮৩) মালবিহীন খালি ট্রাকটি ভোলাগঞ্জ থেকে সিলেটের উদ্দেশে আসার সময় তেলিখাল ইউনিয়নের মূল সড়কে পানির প্রবল স্রোতে তলিয়ে যায়। সে সময় ট্রাকের চালক ও হেলপার ছিলেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
অপরদিকে, সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের নলকট গ্রামে বানের পানির স্রোতে ভেসে যান হাদি (১৮) নামের এক তরুণ। তিনি গ্রামের কাঁচা মিয়ার পুত্র।
নলকট গ্রামের বাসিন্দা নলকট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক মামুন জানান, সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন হাদি। গভীর রাত পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, সুনামগঞ্জের ছাতক কর্মস্থল থেকে সিলেট ফেরার পথে নিখোঁজ রয়েছেন এক ব্যাংক কর্মকর্তা।
নিখোঁজ আব্দুল লতিফের ঘনিষ্ঠজন স্কুল শিক্ষক আবুল হোসেন জানান, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় একটি ছোট নৌকা নিয়ে ছাতক থেকে সিলেটে ফিরছিলেন ৫ জন। ধারণা করা হচ্ছে, নৌকাডুবিতে ৫ জনের মধ্যে সেও থাকতে পারে। স্বজনরা আব্দুল লতিফের সন্ধানে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সিলেট ফায়ার স্টেশনের কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, আমরা পৃথক তিনটি নিখোঁজের সংবাদ পেয়েছি। রাত হওয়ায় কিছু করা যাচ্ছে না। সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বের হবেন বলে জানানো হয়।
সিলেট নগরীসহ সবকটা উপজেলার ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি প্রবেশের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। চরম অন্ধকারে আতঙ্কে রয়েছেন বানভাসি লোকজন। এমনকি, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতেও আসতে পারছেন না। সন্ধ্যা পর্যন্ত সুরমা কুশিয়ারা সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাত ১টা পর্যন্ত পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।