প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগঃ তৃতীয় ধাপের উত্তরপত্র মূল্যায়নে ত্রুটি, সংশোধিত ফল রাতেই

লেখক:
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপে ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফল স্থগিত করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রকাশিত ফলাফলে দুটি সেট কোডের উত্তরপত্র মূল্যায়নে কারিগরি ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ফলে পুনরায় মূল্যায়ন শুরু করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ টিম। পুনঃমূল্যায়ন শেষে আজ রাত ১২টার মধ্যেই সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হবে।

 

রোববার (২১ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিনের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ফলাফল রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক স্মারকে প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ২৩ হাজার ৫৭ জন প্রার্থী। প্রকাশিত ফলাফলে মেঘনা ও যমুনা সেটের পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নে কারিগরি ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে।

 

এজন্য মেঘনা ও যমুনা সেটের পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র আইআইসিটি, বুয়েটের কারিগরি টিম এরই মধ্যে পুনঃমূল্যায়নের কাজ শুরু করেছে। রোববার দিনগত রাত ১২টার মধ্যে মেঘনা ও যমুনা সেটের পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়ন করে নিরীক্ষান্তে সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

এর আগে রোববার দুপুরে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বিকেল থেকে অনেক প্রার্থী ভালো পরীক্ষা দিয়েও ফল না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন। অনেকে ফেসবুকে পোস্ট দেন। পরে মেঘনা ও যমুনা কোডের প্রার্থীরা গ্রুপ খুলে সেখানে কারা কারা ভালো পরীক্ষা দিয়েও ফল পাননি, তা জানাতে থাকেন।

বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিপদপ্তরের দৃষ্টিগোচর করলে দুই সেটের উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়।

ফল না পাওয়া পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভালো পরীক্ষা দিলেও তাদের ফল আসেনি। প্রথমে তারা বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে নিয়েছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে এমন অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ কারণে তারা ফেসবুকে গ্রুপ খুলেছেন। সেখানে সংশ্লিষ্ট দুই সেটের ফল নিয়ে অভিযোগকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তারা বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার দিকে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন।

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার প্রার্থী শারমিন আক্তার। পরীক্ষায় তার সেট কোড ছিল মেঘনা। তিনি ভালো পরীক্ষা দিয়েও ফল আসেনি বলে অভিযোগ করেন। শারমিন আক্তার বলেন, ‌‌‘আমার ৫৭-এর বেশি নম্বর আসার কথা। নারী ও জেলা কোটার কারণে আমার রেজাল্ট অবশ্যই আসার কথা।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার প্রার্থী রোকসানা আক্তার। তার সেট কোড ছিল যমুনা। তিনি বলেন, ‘৬৮ নম্বর আসার কথা। তারপরও রেজাল্ট না আসায় মন খারাপ ছিল। পরে ফেসবুকে দেখছি একের পর এক পোস্ট। মেঘনা ও যমুনা কোডের প্রার্থীরা বলছেন, তাদের রেজাল্ট আসেনি। তখন বিষয়টি নিয়ে আমারও খটকা লাগলো। আমাদের দাবি, ফলাফলে প্রস্তুতে কোনো ধরনের ভুল-ত্রুটি হলো কি না, তা যেন কর্তৃপক্ষ পুনরায় যাচাই করে দেখেন।’

একই অভিযোগ করেন যমুনা সেট কোডে পরীক্ষা দেওয়া লক্ষ্মীপুরের তাসলিমা আক্তর, মোহাম্মদ রোমান হোসাইন, কুমিল্লার হোসনা বেগম, মেঘনা সেটের চাঁদপুরের কচুয়ার সোহাগ হোসেন, একই এলাকার ইভার রহমানসহ আরও অনেকে।