প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রযাত্রা-প্রেক্ষিত শিক্ষানীতি ২০১০ঃ বরিশাল জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে বিস্তর তর্ক বিতর্ক হয়েছে। এসব তর্ক বিতর্কে প্লেটো-সক্রেটিসরা যেমন রসদ যুগিয়েছেন, তেমনি হালের শিক্ষক-সাহিত্যিকরাও কম যান না। প্লেটোর মতে, “শরীর ও আত্মার পরিপূর্ণ বিকাশ ও উন্নতির জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা সবই শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত”। আবার প্লেটোরই শিক্ষক সক্রেটিসের মতে, “শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো মিথ্যার বিনাশ আর সত্যের আবিষ্কার”। অপরদিকে কিছুটা সংরক্ষণবাদীর মতো এরিস্টটল বলেছেন,“শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্যে হলো ধর্মীয় অনুশাসনের অনুমোদিত পবিত্র কার্যক্রমের মাধ্যমে সুখ লাভ করা”। এই সহজ সরল প্রশ্নের হাজার বছরের জিজ্ঞাসায় আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম যোগ করেছেন “আমরা চাই আমাদের শিক্ষাপদ্ধতি এমন হউক যাহা আমাদের জীবনীশক্তিতে ক্রমেই সজাগ, জীবন্ত করিয়া তুলিবে। যে-শিক্ষা ছেলেদের দেহ-মন দুইকেই পুষ্ট করে তাহাই হইবে আমাদের শিক্ষা”। বাঙালির মননের শিক্ষক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর মতে চূড়ান্ত মুক্তিই শিক্ষার উদ্দেশ্য।

তিনি অর্থচিন্তার মুক্তির সাথে সাথে “চিন্তার স্বাধীনতা, বুদ্ধির স্বাধীনতা, আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে নেই সেখানে মুক্তি নেই” বলে মানবসত্তার মুক্তিতেই জোর দিয়েছেন। শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যগুলোকে একত্রিত করে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এ বলা হয়েছে, “শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য মানবতার বিকাশ এবং জনমুখী উন্নয়ন ও প্রগতিতে নেতৃত্বদানের উপযোগী মননশীল, যুক্তিবাদী, নীতিবান, নিজের এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কুসংস্কারমুক্ত, পরমতসহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক এবং কর্মকুশল নাগরিক গড়ে তোলা।” অর্থাৎ শিক্ষার শারীরিক দিকটির পাশাপাশি মানবিক দিকটি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। যেহেতু প্রাথমিক শিক্ষা হলো আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রাথমিক ধাপ এবং যেহেতু এইধাপেই শিশুদের ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে উঠে, সেহেতু প্রাথমিক শিক্ষা হতে হবে যথাযথ মানসম্পন্ন, আনন্দদায়ক এবং যুগোপযুগী।২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নির্বাচনী ইশতেহারে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্নসোপানের অংশ হিসেবে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা যুগোপযুগী ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এই প্রতিশ্রুতির আলোকে জাতীয় অধ্যাপক কবির চৌধুরীকে চেয়ারম্যান ও ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদকে কো-চেয়ারম্যান করে আঠারো সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়, যে কমিটি শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, রাজনীতিক, আলেম-ওলামা, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মতামত নিয়ে প্রণয়ন করে “জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০”।“সকলের জন্য মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিত করার তাগিদ সংবিধানে বিধৃত আছে। তাই প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে।” শিক্ষানীতির এই অঙ্গীকারকে সমুন্নত রাখতে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে শতভাগ রাষ্ট্রীয়করণ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যমান 39,241 টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি আরো 26,316 টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে প্রায় ৩৭,০০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের পথ পরিক্রমায় বর্তমান সরকার এ বিপুল সংখ্যক প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষার সার্বজনীনরূপকে প্রতিষ্ঠা করেছে।

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর সুপারিশ অনুসারে প্রাথমিক শিক্ষাস্তর ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীতকরণের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ২০১৩ শিক্ষাবর্ষে দেশের প্রতিটি উপজেলা/থানায় ০১টি করে মোট ৫০৩ টি নির্বাচিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর পাঠদান চালু করা হয়েছে। পাইলট প্রকল্প থেকে লব্ধ অভিজ্ঞতার আলোকে প্রাথমিক শিক্ষাকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীতকরণের জন্য অবকাঠামো ও মানসম্পন্ন শিক্ষক সংকট দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি), বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (SLIP) এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিকল্পনাসহ (UPEP) অন্যান্য প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন ও শিক্ষক সঙ্কট দূরীকরণের মাধ্যমেস্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ২০২১ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত করার লক্ষ্য পুনঃনির্ধারণ করেছে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর আলোকেপ্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকার চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) শীর্ষক ৩৮ হাজার ৩৯৭ কোটি ১৬ লাখ টাকার একটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে । ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত চলমান এ প্রকল্পে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির পাঠদান কার্যক্রম চালু করা, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উন্নত খাবার সরবারাহের বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়ছে।

এ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষক নিয়োগ ও পদায়ন, ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৪ জন শিক্ষককে ডিপিইনএড, ৫৫ হাজার শিক্ষককে বুনিয়াদি, ১ হাজার ৭০০ শিক্ষককে এক বছর মেয়াদি সাব-ক্লাস্টার, ২০ হাজার শিক্ষককে এক বছর মেয়াদি আইসিটি, ৬৫ হাজার শিক্ষককে লিডারশিপ ও ১ লাখ ৩০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে ব্রিটিশ কাউন্সিলের (সিঙ্গেল সোর্স) মাধ্যমে ইংরেজি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। শ্রেণীকক্ষ সংকট দূর করতে প্রকল্পটির আওতায় ৪০ হাজার অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ, তথ্য প্রযুক্তির নির্ভর আধুনিক পাঠদান কার্যক্রমের জন্য শিক্ষা উপকরণ হিসেবে ৭১ হাজার ৮০৫টি ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও স্পিকার বিতরণ, সহজ ঋণ সুবিধার মাধ্যমে ৮০ হাজার শিক্ষকের জন্য নিজস্ব আইসিটি সরঞ্জামাদি কেনা হবে। এছাড়া ১০ হাজার ৫০০ জন প্রধান শিক্ষকের কক্ষ নির্মাণ, ৩৯ হাজার পুরুষ ও ৩৯ হাজার নারীর ওয়াশ ব্লক নির্মাণ এবং ১৫ হাজার বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়ার আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলতে প্রত্যেকের জন্য শিক্ষা সহায়ক উপকরণ (ড্রেস, জুতা ও ব্যাগ) কেনার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অডিও ভিজুয়াল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম সম্পাদনের জন্য ডিজিটাল ই-কনটেন্ট তৈরী করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষক কর্তৃক পাঠদানের পাশাপাশি এসব ই-কনটেন্ট শিশুদের বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষণের কাজটি করবে। ইংরেজি ভীতি দূর করার জন্য পাঠ্য বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা অডিও শিক্ষার্থীদের ক্লাসে শোনানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে, যা শিক্ষার্থীদের listening এবং speaking দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করবে।জাতীয় শিক্ষানীতির অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর দেশাত্মবোধের বিকাশ ও দেশগঠনমূলক কাজে উদ্বুদ্ধ করা। নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উপলব্ধি এবং সংগ্রামী ইতিহাস জানানোর উদ্দেশ্যে দেশব্যাপী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বিজয়ফুল’ প্রতিযোগিতা ২০১৯ আয়োজন করেছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিজয়ফুলের সাতটি ভাগ যথা ছয়টি পাপড়ি ও তার মাঝখানে একটি কলি রয়েছে। সাতটি ভাগ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এবং ছয়টি পাপড়ি বাঙ্গালির মুক্তির সনদ ছয় দফাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। নতুন প্রজন্মের প্রতিটি অন্তরে জাতীয় সঙ্গীতের অন্তর্নিহিত বাণী ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে একযোগে সারাদেশে অনুষ্ঠিত হয় শুদ্ধস্বরে জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতা। তাছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সকল বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক পাঠ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এসব বহুমাত্রিক উদ্যোগের ফলে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা ও ইতিহাস ছড়িয়ে পড়বে নতুন প্রজন্মের প্রতিটি অন্তরে। শিক্ষানীতির অন্যতম উদ্দেশ্য “শিক্ষা ক্ষেত্রে পশ্চাৎপদ এলাকাসমূহে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে”সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প-৪, রিচিং আউট অব চিল চিলড্রেন (রস্ক) প্রকল্প, বিশ্ব খাদ্য কর্মসুচির আওতায় স্কুল ফিডিং প্রকল্প, ইসি এ্যাসিস্টেড স্কুল ফিডিং প্রকল্প (ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিস্কুট বিতরণ), বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, জীবিকায়ন দক্ষতা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলমান। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প-৪ এর আওতায় বছরের শুরুতেই ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে শিক্ষাসামগ্রী (খাতা, কলম, স্কুল ব্যাগ) কিনতে ৫০০ টাকা করে দেয়া হবে এবং উপবৃত্তির টাকা ১০০ টাকার পরিবর্তে ১৫০ টাকা করে প্রদান করা হবে। বর্তমানে দেশের ১০০% দরিদ্র পরিবারের সন্তান উপবৃত্তির আওতাভুক্ত হয়েছে। স্কুল ফিডিং প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ক্যালরি নিশ্চিতকরণের জন্য মিড ডে মিল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালুর লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে ১০৪টি উপজেলার ২৯.৪২ লক্ষ শিশুদের স্কুল খোলার দিন জনপ্রতি ৭৫ গ্রাম ফর্টিফাইড বিস্কুট বিতরণের কার্যক্রম চলমান আছে। সরকার বর্তমানে ২০২০ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ১৯৮ জন ছাত্রছাত্রীর মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৩৮টি বই। তন্মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে ৯ কোটি ৮৫ লাখ পাঁচ হাজার ৪৮০টি বই। বর্তমান সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে ২০১০ সাল থেকে শুরু করে ২০২০ পর্যন্ত ১১ বছরে প্রাথমিক, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে মোট ৩০০ কোটি ৩৬ লাখ ৪১ হাজার ৩৭০টি বই বিতরণ করেছে। তাছাড়াও শিক্ষানীতির আলোকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দানের লক্ষ্যে ২০১৯ সালেই প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদরী শিক্ষার্থীদের মাঝে ৩৪ হাজার বই, সমসংখ্যাক অনুশীলন খাতা এবং ১ম ও ২য় শ্রেণীর জন্য প্রায় ২.০৭ লক্ষ বই বিতরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক ও দৈহিক বিকাশে আন্তঃপ্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পড়াশুনার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক বিকাশ, ঐক্য এবং প্রতিযোগিতার সহায়ক হিসেবে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জাতীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্ট এবং ছাত্রীদের জন্য বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়।

স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত পাঁচটি কমিশন/রিপোর্ট এবং দুটি শিক্ষানীতি ঘোষিত হয়েছে। উর্দি শাসকদের প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা চেতনা, বিতর্কিত-খণ্ডিত প্রতিবেদনের মধ্যে বন্দী থেকেছে শিক্ষার অগ্রযাত্রা। বর্তমান সরকার কালবিলম্ব না করেই জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়নে হাত দেয়, যার ফলে বাস্তবিকই শিক্ষা হয়ে উঠেছে অধিকার এবং আধুনিক, প্রযুক্তি নির্ভর, মানবতাবোধ সম্পন্ন শিক্ষা সকল স্তরেই ছড়িয়ে পড়ছে।

“টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট” এর লক্ষ্যমাত্রা ৪ এ যে শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে যে উন্নত দেশের স্বপ্প বাস্তবায়নের পথ ধরে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি তার অন্যতম সিঁড়ি হলো প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। সেই শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতোমধ্যেই আমরা বহুদূর এগিয়ে গেছি। বাকী পথ হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমেই আমরা গড়ে তুলবো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্পের সোনার বাংলা।