মানিকগঞ্জে ভাড়া বাসায় পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী বিলকিস আক্তার খুন হওয়ার তিনদিন পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন, রাজবাড়ী সদর উপজেলার হুগলাডাঙ্গি গ্রামের মো. কবির হোসেন (৩০), তার স্ত্রী আঁখি মনি ওরফে লিপি আক্তার (২০), একই গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন সরদার (২৬) ও বগুড়ার ভান্ডারবাড়ি গ্রামের মো. শাকিল হাসান (১৯)। তারা সবাই সাভারের আশুলিয়া এলাকায় ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ জানায়, টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়ার জন্যই জুস ও কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পর বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয় বিলকিসকে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণও করা হয়েছিল।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
তিনি আরও জানান, নিহত বিলকিসের পূর্ব পরিচিত ছিল লিপি আক্তার ওরফে আঁখি। ঘটনার দিন জুস ও কোমল পানীয় নিয়ে বিলকিসের বাড়িতে বেড়াতে আসেন লিপি। এরপর রাতে আসেন আঁখির স্বামী কবির হোসেনসহ আরও তিনজন।
বিলকিসকে কোমল পানীয় ও তার দুই ছেলে মেয়েকে জুস খেতে দেন তারা। খাওয়ার পর বিলকিস ও তার ছেলে ফাহিম (১২) ঘুমিয়ে পড়ে। সামান্য পরিমাণ খাওয়ায় বিলকিসের মেয়ে দোলা আক্তার (৬) কিছুক্ষণ জেগে ছিল। পাশের রুমে দরজার ফাঁক দিয়ে মেয়ে দেখতে পায় ঘাতকরা গভীর ঘুমে থাকা তার মায়ের হাত-পা বাঁধছে। ভয়ে কিছু না বলে ভাইয়ের পাশে শুয়ে থাকে মেয়েটি। এক পর্যায়ে সেও ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে ওঠে মায়ের মরদেহ দেখতে পায় এবং আশপাশের লোকজনকে ডেকে আনে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিলকিসের হাত, পা ও মুখ বাঁধার পর আসামি রিয়াজ উদ্দিন তাকে ধর্ষণ করে। এরপর স্বর্ণালংঙ্কার ও টাকা পয়সা লুটে পালিয়ে যায়।
তদন্তে নেমে বিলকিসের মেয়ের কাছে প্রথমে শুধু লিপির নাম জানতে পারে পুলিশ। এরপরই হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং লিপির খোঁজে মাঠে নামে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সভার, গাজীপুর ও পাবনায় অভিযান চালিয়ে লিপিসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ তিনটি মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
দুপুরে আসামিরা অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।