সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইউসুফ মাহমুদ নামে এক পুলিশ সদস্য তার প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দিয়েছেন। এটি সহ্য করতে না পেরে প্রেমিকা ইসরাত জাহান নাফিজা (১৮) বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন।
এ ঘটনায় ইউসুফ মাহমুদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তরুণীর বাবা মো. হেলাল বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেছেন। বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগতির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করা হয়।
বাদীর আইনজীবী জসিম উদ্দিন সুমন বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারক কাজী সোনিয়া আক্তার আমলে নিয়েছেন। এটি নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য বলেছেন বিচারক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ইউসুফের মা রহিমা বেগম ও বোন ঝর্ণা বেগম। তারা রামগতি উপজেলার বড়খেরি গ্রামের বাসিন্দা। ইউসুফ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ লাইন্সে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, উপজেলার বড়খেরি গ্রামের ইয়াছিনের ছেলে ইউসুফের সঙ্গে চরআফজল গ্রামের নাফিজার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুযোগে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নাফিজার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েন কনস্টেবল ইউসুফ।
এ সময় প্রেমিকার আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি ধারণ করেন ইউসুফ। এরপর থেকে ভিডিও ও ছবিগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তরুণীর সঙ্গে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিলেন তিনি।
একপর্যায়ে তরুণী তার পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউসুফ আপত্তিকর ভিডিও ও ছবিগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। সেই সঙ্গে তরুণীর বোনের ইমোতে ছবি ও ভিডিওগুলো পাঠান।
এটি দেখে গত ১ আগস্ট তরুণী ইউসুফের বাড়িতে যান। সেখান থেকে তাকে অপমান করে বের করে দেয়া হয়। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় নাফিজা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ১০ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসা দেয়া হয়। বাড়িতে নিয়ে এলে পরদিন তার অবস্থার অবনতি ঘটলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম নেয়ার পথে নাফিজা মারা যান।