পিরোজপুরে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ, শয্যা সংকট

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

গ্রীষ্মকালের তীব্র তাপদাহে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। যার প্রভাব পড়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েকদিনের তীব্র গরমে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড না থাকা ও জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

৬টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সসহ ৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। প্রতিটি টিমে রয়েছে ৩ জন করে সদস্য।

এদিকে হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় সাধারণ বেডও খালি নেই। ওয়ার্ডের ভেতর জায়গা না পেয়ে রোগীদের বারান্দার মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এমনকি হাপাতালে সিড়ির রুম পর্যন্ত ফাঁকা নেই।

এছাড়া হাসপাতাল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কাজে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সহকারী কোনো কর্মচারী না থাকায় হাসপাতালটিতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে।

হাসাপতালের এমন অবস্থা দেখে উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত মিরাজুল ইসলাম ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশনের মাধ্যেমে ৬ জন জনবল দিয়ে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা কোনো ওয়ার্ড নেই।

তবে সাধারণ রোগীরদের ওয়ার্ডে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলাদা করে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে।

তবে প্রতিদিন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় শয্যা না পেয়ে ওয়ার্ডের মেঝে ও হাসপাতালের বারান্দায় তাদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

উপজেলার গাজীপুরের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ছেলেকে নিয়ে দুইদিন হসপিটালে ভর্তি রয়েছেন।

ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর চাপ, শয্যা সংকট ও ভ্যাপসাগরমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

কাঠালিয়া উপজেলার বিনাপানীর বাসিন্দা শাহিনুর বেগম বলেন, নাতিকে নিয়ে ভোররাতে হাসপাতালে আসছি।

হাসপাতালে কোনো বেড নাই। তাই ফ্লোরে বসে চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতেলের টয়লেট ও ফ্লোর নোংরা। বারান্দায় কোনো ফ্যান নাই তাই গরমে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সিনিয়র নার্স আরিফা জানান, ৫০ শয্যা থেকে বর্তমানে ১০০ শয্যায় উন্নীত হলেও এই হাসপাতালে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে কোনো রকম চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

 

প্রায় প্রতিদিন গড়ে ডায়রিয়ার রোগী ১৫০ থেকে ২০০ রোগী ভর্তি আছে। জনবলের প্রায় তিনগুণ ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি থাকায় সেবার মানোন্নয়নের চেষ্টা বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।

হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধি ও শয্যা সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।

ডায়রিয়ার এত রোগী একসঙ্গে ভর্তি হওয়ারর কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এই মুহূর্তে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ না দেওয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যেতে পারে। বর্তমানে ডাক্তার, স্যালাইন ও ওষুধ সংকট নেই।

পিরোজপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী বলেন, জেলার সবচেয়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভান্ডারিয়ায় বেশি। তবে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নাই।

সাধারণত বছরের এই সময়টায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। তবে আমাদের পর্যপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন মজুদ আছে।